‘সুদ কারবারিদের জন্য আত্মহত্যা করছি’, ফেসবুক পোস্টের পর মিলল ঝুলন্ত লাশ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ আগস্ট ২০২২, ৩:১০ অপরাহ্ণ
সুদ কারবারিদের দায়ী করে আত্মহত্যা করবেন ফেসবুকে এমন একটি পোস্ট দেন এক যুবক। এর ঘন্টখানেক পর ওই যুবকের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায়।
ওই যুবকের নাম ফয়সাল আহমেদ সৌরভ (৩৫)। তিনি উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পাতারী গ্রামের আজিজুর রহমান মকদছের ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বালিজুরী ইউনিয়নের লোহাছুড়া এলাকায় গাছের সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ৯টার দিকে ফয়সাল আহমেদ সৌরভ তার নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে সুদের ব্যবসায়ীদের নাম উল্লেখ একটি পোস্ট দেন।
পাঠকদের জন্য ফয়সাল আহমেদ সৌরভের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
আমি গলায় দরি দিমাল তোই রফিকের লাগি তোই আমারে কাবু করিয়া লাষ বানাই লি,তোই ভাল থাক বেইমান,
সফিকের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা আনছিলাম সুদে, তিন লক্ষ টাকা সুদ দিয়েও সারে তিন লক্ষ এখনও পায়,এই রফিক আর সফিকের লাগি আত্মহত্যা করলাম,ভাল থাক আমার পরিবার মা ফাইজা আমায় ক্ষমা করো
মা বাবা, ভাই বোন তোমারা ক্ষমা করিয়
বউ তোমাকে কিছু বলার নাই….?
ইতি
এক কাপুরুষ!!!
সৌরভের এই পোস্ট পরিচিতজন ও পরিবারের সদস্যদের নজরে এলে তার খুঁজে বের হন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরের রক্তি নদী পাশের লোহাছুড়া গ্রামের একটি গাছে রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সৌরভের পরিবার অভিযোগ করছেন, স্থানীয় আনোয়ারপুর এলাকার সুদ ব্যসবসায়ী রফিক আর সফিকের কাছ থেকে সুদে টাকা এনেছিলেন সৌরভ। এরপর সুদসহ সেই টাকা দিয়ে দিয়েছেন। এরপরও টাকা দেয়নি বলে সৌরভকে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে রফিক আর সফিক। টাকার জন্য চাপ দেয়। রাতে টাকা চাইলে না দেওয়ায় পিটিয়ে মেরে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে।
তবে সৌরভের পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক রফিক আর সফিকের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তাহিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা সিলেটটুডেকে বলেন, ‘সুদের টাকার জন্য এক যুবকের আত্মহত্যার খবর আমরা পেয়েছি। এখনও থানায় এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্হা নেওয়া হবে। লাশ পাশের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে রয়েছে। তাহিরপুর থানার পুলিশ লাশ আনার জন্য ওখানে (বিশ্বম্ভরপুরে) পৌঁছেছে।’