হবিগঞ্জে ৪টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ: ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১০:২২,অপরাহ্ন ২৭ জুলাই ২০২২
চলতি মাসের নির্ধারিত বরাদ্দ শেষ হওয়ায় হবিগঞ্জের ৪টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।
অটোরিকশার চালকরা বলছেন, পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় ট্রিপের সংখ্যা কমে গেছে। এজন্য বাধ্য হয়ে ভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে।
জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড হবিগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. খালেদ গণি জানান, জেলায় ৮টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি গ্যাস বিক্রি হওয়ায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার থেকে ৪টি স্টেশন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এগুলো হল- মাধবপুর উপজেলার আল আমিন ফিলিং স্টেশন, সেমকো ফিলিং স্টেশন এবং শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার জিএস ব্রাদাস ফিলিং স্টেশন এবং শায়েস্তাগঞ্জ সিএনজি স্টেশন।
এদিকে ৪টি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হওয়ায় বাকী চারটিতে গ্যাস নিতে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। ভোর ৪টা থেকে রাতভর সেগুলোতে শতশত অটোরিকশার লাইন দেখা যায়। এ সময়ে চালকদেরকে সীমিত পরিমাণ গ্যাস দিলেও লোডশেডিং শুরু হলে একেবারেই গ্যাস সরবরাহ করতে পারে না ফিলিং স্টেশন।
সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালু থাকা হবিগঞ্জের এম হাই অ্যান্ড কোং ফিলিং স্টেশনে কয়েকশ’ অটোরিকশার প্রায় এক কিলোমিটার লাইন দেখা গেছে।
বেলা ১টায় চালক সেবুল মিয়া বলেন, ভোর ৬টায় লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত গ্যাস পাইনি। সন্ধ্যায় গাড়ি মালিক এসে ভাড়া চাইবে। কিন্তু সারাদিনে একটিও ট্রিপ দিতে পারিনি। এ অবস্থায় পরিবারের ৮ সদস্যদের নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, দিনভর গ্যাস না পেয়ে চালকরা সেখানে বিক্ষোভ করছেন। এরপর কিছু চালকদের মাত্র ১শ’ টাকার গ্যাস নিতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কে সিএনজি অটোরিকশায় ৪০ টাকা ভাড়ার স্থলে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা করে। অন্যান্য সড়কেও একইভাবে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এনিয়ে জেলার বিভিন্ন সড়কে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে যাত্রীদের ঝগড়া হয়েছে। কোথাও কোথাও হাতাহাতিও হয়।
বানিয়াচং থেকে হবিগঞ্জে আসা সুমেনা আক্তার বলেন, নিয়মিত ভাড়া ৪০ টাকা হলেও চালকরা ১৫০ টাকা ছাড়া গাড়িতে যাত্রী তোলেন না। তাই তাদের দাবি অনুযায়ী ভাড়া দিয়ে এসেছি। একই কথা জানিয়েছেন নাজরিন আক্তার ও ফারুক আহমদসহ আরও কয়েকজন যাত্রী।
অটোরিকশা চালক কবিরুল মিয়া বলেন, ১০০ টাকার বেশি গ্যাস দেওয়া হবে না এ বিষয়টি আগে জানলে অটোরিকশা নিয়ে বের হতাম না। এখন রোজগার না হলেও মালিককে ভাড়া দিতেই হবে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রনি মিয়া বলেন, অন্য সময় সারাদিনে ৮/১০টি ট্রিপি দিলেও এখন গ্যাস সংকটের কারণে ২টিও দিতে পারছি না। গাড়ির মালিককে প্রতিদিন ৫০০ টাকা দিতে হয়। এজন্য বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছি।
এ বিষয়ে সিএনজি স্টেশনের এক মালিক বলেন, ৪টি ফিলিং স্টেশন বন্ধ রেখে অন্য ৪টি চালু রাখা হয়েছে। এক সপ্তাহ পর বন্ধগুলো চালু করে দেওয়া হবে এবং যেগুলো আগে চলেছে সেগুলো বন্ধ করা হবে। গ্যাসের সংকট মোকাবিলায় এমনটি করা হচ্ছে। এতে সড়কে দুর্ভোগ বেড়েছে।