বিশ্বনাথের পংকি-ফারুকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৪:০৬,অপরাহ্ন ৩১ মে ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পংকি খান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদকে দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে।
বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের পক্ষে অভিযোগটি পাঠিয়েছেন বিশ্বনাথ উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রুহেল খাঁন।
আজ মঙ্গলবার ( ৩১ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গৃহীত এই দরখাস্তে রুহেল খাঁন উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ বিশ্বনাথ শাখার বর্তমান সভাপতি পংকি খানের দৌরাত্যে সাধারণ নেতা-কর্মীরা অসহনীয় যন্ত্রনায় দিন কাটাচ্ছেন। তিনি আগে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ কারণে জামায়াত, বিএনপি কর্মীদের প্রতি তার সখ্যতা ও দুর্বলতা রয়েছে। এমনকি তার বর্তমান ড্রাইভারও বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তাদের কারণে বর্তমানে আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ নেতা কর্মীরাও আজ দিশেহারা। পংকি ও ফারুক আহমদ আওয়ামী লীগকে ভোট দেননি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আলীর সময়ে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে থাকায় তিনি আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের উপর অত্যাচার, নির্যাতন, মামলা, হামলা, জায়গা জমি দখল, বাড়ী-ঘর পোড়ানো, ৭ মার্চের মিছিলে গুলি করে ৭০জন নেতাকর্মীকে আহত করা, বঙ্গবন্ধু ও আপনাকে নিয়ে চরমভাবে কটুক্তি করেছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর পংকি খাঁন কৌশলে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সিলেটের কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা ( নং-৭/৬/০২/২০১৭) এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৫/২ ধারার দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলাও রয়েছে যা তদন্তকারী কর্মকর্তা সত্যতা পেয়ে চার্জশিট দিয়েছেন। মামলাটি বিচারাধীন।
রুহেল খাঁনের আরও অভিযোগ, পংকি খাঁন আওয়ামী লীগের ব্যানারধারী বিএনপি, জামাতের একজন এজেন্ট। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিচার সালিশে বিশ্বনাথের সাধারণ জনগণনের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ এবং তার ভাই ফিরােজ খানের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ বাজারে মানুষের ভিটা দখল থেকে শুরু করে নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগও আছে।
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে রুহেল খাঁনের অভিযোগ, ফারুক আহমদ তার জামায়াত সমর্থনকারী মামা কবির আহমদ খনিককে তার বাড়ীতে রেখে শেল্টার দিচ্ছেন। এমনকি তার বাড়ীর অনেক বিলাসী কাজকর্মও হচ্ছে জামায়াত নেতার টাকায়।
রুহেল খাঁন উল্লেখ করেন, পংকি খান ও ফারুক আহমদের কারণে বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা হতাশায় ভুগছেন এবং এ উপজেলায় দলীয় সাংগঠনিক অবস্থা বর্তমানে চরম দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় দলীয় সাধারণ নেতা-কর্মীরা তাদের আর বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চায়না।
তিনি পংকি খান ও ফারুক আহমদের বিরুদ্ধে দলীয় শিষ্ঠাচার, দুর্নীতি এবং অপকর্মের সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দল থেকে চিরতরে বহিষ্কারের নির্দেশ প্রদান ও বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করতে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবি জানান।
রুহেল খাঁন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সিলেট জেলা যুবলীগ প্রমুখ নেতৃবৃন্দের কাছে তার আবেদনের অনুলিপিও পাঠিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ বলেন, অভিযোগকারীর পিতা ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী। এটা আমার মুখের কথা নয়। এ সংক্রান্ত গ্যাজেট পর্যন্ত আছে। আর আমরা ছাত্রলীগের রাজনীতি করে এসেছি। দলের জন্য আমরা ত্যাগী। এটা সারা বিশ্বনাথের মানুষ জানেন। তাছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যাপারে যুবলীগের সদস্য অভিযোগ করতে পারেনা। এটা অযৌক্তিক। যাই হোক, আমরা এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছিনা।