ভারতে বউ পাচার, নবীগঞ্জের সোহেল গ্রেফতার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০২২, ৮:০৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ফেসবুকে প্রেম করে খুলনার মেয়েকে বিয়ে ও পরে ভারতে পাচারের পর আটকে ধর্ষণ ও মানব পাচার মামলার প্রধান আসামি সোহেল মিয়াকে (২৭) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯ সদস্যরা।
আজ মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুর ১২টায় মৌলভীবাজার সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৯, হবিগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল।
গ্রেফতারকৃত সোহেল মিয়া নবীগঞ্জের বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া আহমদের ছেলে।
র্যাব-৯ সিপিসি-১ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ক্যাম্প কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান।
এর আগে ফেসবুকে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সোহেলের সাথে প্রেমের প্রেমের সম্পর্কে নুর নাহার (ছদ্মনাম)। এরপর তাকে কৌশলে ভারতীয় পাচারকারীর হাতে তুলে দেন সোহেল। ভারতে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাকে একাধিকবার পাচারদলের সদস্যরা ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছেন সেই নারী।
এ ঘটনায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ শনিবার দিনভর অভিযান চালিয়ে পাচারদলের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, মোকছেদুল হক, চম্পা বেগম নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে।
রোববার (২২ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, এ ঘটনার মুল হোতা সোহেল মিয়া।
পাটগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৩ বছরে আগে টিকটক করতে গিয়ে পরিচয় ও প্রেম। তারপর প্রেমিক সোহেল – প্রেমিকা নুর নাহারকে (ছদ্মনাম) অবৈধভাবে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে।
সেখানে প্রেমিকা নুর নাহারকে দিয়ে জোর পূর্বক দেহ ব্যবসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু নুর নাহার বিষয়টি বুঝতে পেয়ে সোহেলের সাথে ঝগড়া করেন। পরে ৮/৯ মাস পর ভারতের কলকাতা থেকে কৌশলে একই পথে দেশে পালিয়ে আসে প্রেমিকা নুর নাহার (ছদ্মনাম) । কিছু দিন পরও দেশে আসেন সোহেল। অনেক বুঝিয়ে তাকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ আদালতে সোহেল-প্রেমিকা নুর নাহার (ছদ্মনাম) বিয়ে করেন। কিছুদিন পর নুর নাহার গর্ভবতী হন। কিন্তু সোহেল তারপর আবারও প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেন প্রেমিক থেকে স্বামী হওয়া সোহেল।
নুর নাহারকে পাচারের জন্য আবারও পাচারকারীদের সাথে যোগাযোগ করে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পাঠিয়ে দেয় স্বামী সোহেল। গত ১৩ মে ভোরে পাচারকারীরা তাকে ওই উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়।
এ সময় নুর নাহারকে ধর্ষণ করেন ওই পাচার দলের সদস্য মোকছেদুল। নুর নাহার ভারতে প্রবেশের পর বুঝতে পারেন তার স্বামী তাকে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ১৫ মে রাতে আবারও নুর নাহার কৌশলে দেশে দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর এবার আশরাফুল ইসলাম নামে অপর এক পাচারকারী দলের সদস্য তাকে ধর্ষণ করেন। টাকার জন্য নুর নাহার ১৫ মে থেকে আটকিয়ে রাখেন পাচার দলের সদস্যরা। সেখান থেকেও কৌশলে পালিয়ে পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় গ্রহণ করে নুর নাহার।