মাধবপুরে যে কারণে স্ত্রীর গালে খুন্তির ছ্যাঁকা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মে ২০২২, ১১:০১ অপরাহ্ণ
হবিগঞ্জের মাধবপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী গালে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দিয়েছে পাষণ্ড স্বামী। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেছে যৌতুক লোভী স্বামীর মা ও বোন। বুধবার রাতে মাধবপুর থানায় নির্যাতিত গৃহবধূ এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী সাইফুল ইসলাম ও শাশুড়ি বেদেনা খাতুনকে (৫০) গ্রেফতার করেছে। গত ১৫ মে দুপুরে উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রায় ৩ বছর আগে উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের মিজান মিয়ার মেয়ে মৌসুমী আক্তারের সঙ্গে বাঘাসুরা গ্রামের আব্দুল নুরের ছেলে সাইফুল ইসলামের বিয়ে হয়। চাকরির সুবাদে সাইফুল একসময় স্ত্রী, মা ও বোনকে নিয়ে নোয়াপাড়ায় ভাড়া বাসায় উঠে। সাইফুল মৌসুমী দম্পতির ১৮ মাসের রাব্বি নামে একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে স্বামী, শাশুড়ি ও বোন দেড় লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছে মৌসুমীকে।
গরিব পিতার পক্ষে এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই দিন দুপুরে সাইফুল ক্ষিপ্ত হয়ে মৌসুমীকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তার বোন নাইমা ও মা বেদেনা খাতুন মিলে মৌসুমীকে মারধর করে। এক সময় মৌসুমীর বাম গালে মাছ ভাজার গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়।
মুখ ঝলসে গেলে যন্ত্রণায় চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে ওই দিনই মৌসুমীর ১৮ মাসের শিশু সন্তানসহ বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সাইফুল। পিতা মিজান মিয়া মেয়ের করুণ অবস্থা দেখে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
মৌসুমী বলেন, বিয়ের পর প্রায়ই যৌতুকের জন্য মারধর ও নির্যাতন করত। আমার গরিব বাবার পক্ষে যৌতুক দেওয়া সম্ভব ছিল না। ওই দিন বাবার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে চাপ দেয়। টাকা দিতে অস্বীকার করায় স্বামী, শাশুড়ি ও বোন মিলে মারধর করে গালে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়।
মাধবপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ বিষয়ে বুধবার রাতে নির্যাতিতা গৃহবধূ স্বামী শাশুড়ি ও ননদকে আসামি করে একটি শিশু ও নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্যাতিতা স্বামী সাইফুলকে পার্শ্ববর্তী লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রাম থেকে ও শাশুড়িকে নোয়াপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।