লাখাইয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির মামলায় শিক্ষক মুমিনুল র্যাবের হাতে গ্রেফতার
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৪০:২৪,অপরাহ্ন ০৯ এপ্রিল ২০২২
লাখাই প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বামৈ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির মামলার অভিযুক্ত পলাতক আসামী শিক্ষক মুমিনুলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব ৯ এর সিপিসি ১ এর একটি দল ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করে মুমিনুলকে। এর আগে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় লাখাই থানায় মামলা হলে পলায়ন করে আত্মগোপনে চলে যান শিক্ষক মুমিনুল। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিমকে জোরপূর্বক একাধিকবার শ্রীলতাহানি করার চেষ্টা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন মুমিনুল
জানা যায়, শ্লীলতাহানির শিকার ওই ছাত্রী লাখাই উপজেলার এক স্কুলের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী । ওই ছাত্রী অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুমিনুল হক তাকে উত্ত্যক্ত করতেন । তার শ্লীলতাহানি , যৌন হয়রানিরও চেষ্টা করেছেন একাধিকবার । গত ১৬ মার্চ সকালে স্কুলের প্রাত্যহিক সমাবেশ ( অ্যাসেম্বলি ) শুরু হলে ওই ছাত্রী অসুস্থতা বোধ করায় সমাবেশে না গিয়ে স্কুল ভবনের তৃতীয় তলায় শ্রেণিকক্ষে বসেছিলেন । এ সময় সহকারী শিক্ষক মোঃ মুমিনুল হক গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন । ওই সময় বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এবং আয়া গৌড়ী সেখানে গেলে মুমিনুল তড়িঘড়ি নিচে নেমে আসেন । পরবর্তীকালে তিনি আবারও গিয়ে ওই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন । তখন ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে মুমিনুল তার মুখ চেপে ধরেন । তার চিৎকারে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো . আব্দুল করিমসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে মুমিনুল ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন । ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই ছাত্রী আত্মহত্যারও চেষ্টা করে বলে দাবি করেন তার বাবা ।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত ও তার বিচার দাবিতে হবিগঞ্জ – লাখাই সড়াইল নাসিরনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে লাখাই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে উক্ত শিক্ষককে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন । উক্ত ঘটনা প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস্ মিডিয়ায় প্রচার হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় । ফলশ্রুতিতে র্যাব -৯ সিপিসি -১ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে । এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা সংবাদ ও স্থানীয় সোর্সের সহায়তায় জানা যায় যে , আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় অবস্থান করছে । এমন সংবাদের ভিত্তিতে , র্যাব -১১ সিপিসি -১ , নারায়ণগঞ্জ এর সহযোগিতায় র্যাব -৯ , সিপিসি -১ এর একটি আভিযানিক দল ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সানারপাড় এলাকা থেকে উক্ত চাঞ্চল্যকর শ্লীলতাহানি মামলার একমাত্র আসামী মুমিনুলকে গ্রেফতার করা হয়।