সেতুর অভাবে বিয়ে হচ্ছে না এখানকার ছেলে-মেয়েদের
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ২:৩৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
নোয়াখালী সদর উপজেলার কাদির হানিফ ইউনিয়নের মুসলিম কলোনির বাসিন্দা ৫৫ বছরের আমিনা বেগম। একটি সেতুর অভাবে ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না তিনি।
আমিনা বেগম বলেন, খালের ওপর কোনো সেতু নেই। সাঁকোর কারণে মেয়েদের বিয়ে দিতে পারি না। ভালো সম্বন্ধ এলেও বিয়ে হয় না। ছেলেদেরও বিয়ে হয় না। মানুষ আমাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে চায় না। যাতায়াতের কারণে আমরা অসুবিধার মধ্যে আছি।
শুধু আমিনা বেগমের নন। এ কষ্ট ঐ কলোনির চার শতাধিক পরিবারের তিন হাজার মানুষের। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে নোয়াখালী খালের উপর একটি অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। জনপ্রতিনিধিরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পরযন্ত আলোর মুখ দেখেনি এই সেতু। দ্রুত সেতু নির্মাণ হলে ভুক্তভোগীদের দুঃখ ঘুচবে এমন প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিদের। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, অল্প সময়ের মধ্যেই এলাকার মানুষের দুর্দশার অবসান হবে।
স্কুলছাত্রী জান্নাত বলেন, বৃষ্টির দিনে এই সাঁকো দিয়ে আমরা স্কুলে যেতে পারি না। বর্ষাকালে অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়। এভাবে আমাদের চলাচল কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এখানে একটা সেতু হলে আমাদের সমস্যা সমাধান হতো।
নোয়াখালী কলেজের শিক্ষার্থী বদরুল হায়দার স্বাধীন বলেন, দেশের অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের এখানে আসতে জেলা শহর থেকে মাত্র ১০ টাকা ভাড়া লাগে। অথচ আমরা অবহেলিত হয়ে আছি। আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান বলেন, এখানে ৩ হাজার লোকের বসবাস। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না, মুসল্লিরা মসজিদে যেতে পারে না। এই সাঁকো দিয়ে অনেক মানুষ পড়ে গেছে। এখানে সেতু হলে এই এলাকার মানুষের খুব উপকার হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফুল হায়দার লেনিন বলেন, আমি সর্বপ্রথম ওমরাহ হজের জন্য জমানো দেড় লাখ টাকা দিয়ে নোয়াখালী খালের উপর কাঠের সাঁকো করে দিয়েছি। সম্প্রতি সাঁকোটি ব্যবহারের অযোগ্য হওয়ায় সবার সহযোগিতা নিয়ে আরো ১ লাখ টাকা খরচ করে মেরামত করে দিয়েছি।
নোয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে.এম সামছুদ্দিন জেহান বলেন, ঐ এলাকার মানুষ কষ্ট করে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছে। ১৫-২০ দিনের মধ্যে সেখানে ৮ ফুট প্রশস্ত কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করে দেব। পরবর্তীতে স্থায়ী সেতু করে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।