যুবলীগ নেতার মেয়েকে অপহরণ করলো বিএনপি নেতার ভাই
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজার জেলা যুবলীগের এক প্রভাবশালী নেতার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে পৌর বিএনপি নেতা ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামের ছোটভাই মো. তুহিন অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপহরণের এক মাস পেরিয়ে গেলেও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি অপহৃতকেও উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন। ভিকটিম বিমানবন্দর সড়কের একটি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
জন্মসনদের অনলাইন সার্ভারের তথ্য অনুযায়ী সে ২০০৪ সালের ১৯ জানুয়ারি কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে জন্মগ্রহণ করেছে।
এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা বলেন, ২ ডিসেম্বর বেলা ১২টার দিকে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়।
এরপর আর বাড়ি ফিরেনি। ওই ঘটনার কারণে ৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর থানায় মেয়ের বাবা একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ ডায়েরি করার এক ৪-৫ দিন পর আমরা জানতে পারি আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামের ছোটভাই মো. তুহিন। ওই ঘটনায় ১০ ডিসেম্বর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আমি একটি মামলা করি।
মামলার ১ মাস হলেও পুলিশ এখনো আমার মেয়েকে উদ্ধার করেনি। এমনকি কাউকে গ্রেফতার করেনি।
এজাহার সূত্র জানায়, জেলা যুবলীগ নেতার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভনে ফুঁসলিয়ে অপহরণ ও সহায়তা করার অপরাধে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি লিপিবদ্ধ হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন- মো. তুহিন ও তার বাবা আবদুল কাদের আদু, তার মা মনিরা বেগম ও তুহিনের বড়ভাই মনিরুল ইসলাম ও ছোটভাই রিদুয়ান। এছাড়া ওই মামলার অন্য আসামি হলেন মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে মো. হিমেল।
এজাহারে দেওয়া তথ্যমতে, বিগত এক বছর তুহিন ভিকটিমকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বিরক্ত করতো, কুপ্রস্তাব দিত। এ নিয়ে বহুবার সামাজিক সালিশি বৈঠক হয়। ঘটনার মাস দুয়েক আগেও তুহিনকে ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়। এরপর তুহিন পিছু হটার ভান ধরে পরে ভিকটিমকে অপহরণ করে।
এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা আরও বলেন, ঘটনার শুরু থেকেই পুলিশের আচরণ রহস্যজনক। তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তিনি প্রতিবারই বলেন আপনারা সন্ধান দেন, পুলিশ উদ্ধার করে দেবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার এসআই আবদুল হালিম বলেন, ওই মামলার ৪ জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। বাকি দুজনকে গ্রেফতার ও ভিকটিম উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র সেন বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি মামলাটি আমি নিজে তদারকি করছি। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকে দিয়েছি। তাদের সন্ধানে একাধিক ইউনিট কাজ করছে।
এদিকে মামলায় অভিযুক্ত কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌর বিএনপির সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, এটি অপহরণের কোনো ঘটনা নয়। আমার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তারা পালিয়ে বিয়ে করেছে। ভিকটিম প্রাপ্তবয়স্ক কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন শুনেছি মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক।
এছাড়া বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করতে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে বলেও তিনি জানান।
কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল বলেন, পুলিশের আচরণ রহস্যজনক। তারা এ মামলার ব্যাপারে ঢিল দিচ্ছে। তাদের আচরণে মনে হচ্ছে বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।