সিলেটে অজানা আতংক-উদ্বেগ: সেনাবাহিনীর টহল, বদলে গেছে শহর
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪৯:৩২,অপরাহ্ন ২৬ মার্চ ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সারা বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। করোনার কবলে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সবকিছু। বাংলাদেশেও একই পরিস্থিতি। দেশের সকল এলাকার মতো জনসাধারণের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সিলেট বিভাগের সকল এলাকায় কাজ করছে সেনাবাহিনী। নিশ্চিত করা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে তাদেরকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সেনা সদস্যরা সচেতনতামূলক প্লেকার্ড নিয়ে মাইকিং করতে দেখা গেছে। এই সব প্লেকার্ডে লেখা ছিলো, আতঙ্ক না ছড়াই, সর্তক থাকি সাহায্য করি, বিদেশ থেকে আসছি যারা কোয়ারেন্টাইনে থাকব তারা, ঘন ঘন হাত ধুই করোনা থেকে নিরাপদ রই, ইত্যাদি।
সিলেট নগরের ব্যস্ততম এলাকা এখন জনশূন্য। বন্ধ রয়েছে শপিং মল ও মার্কেট।বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) থেকে বন্ধ হয়েছে গণপরিবহন চলাচলও। ফাঁকা সিলেট নগরে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
দোকান-পাট বন্ধ থাকায় এবং গাড়ি চলাচল সীমিত হওয়ার পাশাপাশি রাস্তায় জনসাধারণের চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ হওয়ায় বদলে গেছে শহর থেকে শুরু করে গ্রামের বাজারগুলোর চিরচেনা ছবি।
বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, গত মঙ্গলবার সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে এক জরুরি মিটিং হয়। তার পরদিন (বুধবার) থেকেই সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নেয়। তবে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে টহল দিচ্ছে তারা।
সিলেট নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানাসহ মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় সেনাবাহিনীকে টহল দিতে ও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘর থেকে বের না হতে পরামর্শ দিতে দেখা যায়। বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। এরপর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ছাড়া অন্যান্য বিপণিবিতান বন্ধ দেখা যায়। রাস্তাঘাটেও লোকজন খুব কম লক্ষ্য করা গেছে। সেনা সদস্যদের টহলের খবরে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে কম।
এদিকে, করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ হওয়ায় আজ সিলেটের বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশন ছিল জনশূন্য। সড়কে মানুষের চলাচল নেই বললেই চলে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। মানুষকে ঘরে রাখতে অব্যাহত রয়েছে সেনাটহল। চারদিকে অজানা আতংক-উদ্বেগ।
সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকেই কোন ধরনের দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। বাস কাউন্টারগুলো একদম ফাঁকা। সব বন্ধ করে কাউন্টার ম্যানেজার ও কর্মচারীরা নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করছেন।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনও ফাঁকা। ট্রেন বন্ধ রয়েছে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই। ফলে সেখানেও শুন্যতা বিরাজ করছে।
বুধবার রাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক ফেসবুক একাউন্ট থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, ’ বৃহস্পতিবার থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কেউ ঘরের বাইরে বের হবেন না। সকাল থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে।’