বিশ্বের ৯৭তম ভাষা সিলেটি, কথা বলেন ১ কোটি ১৮ লাখ
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৪:৪১,অপরাহ্ন ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সুরমা নিউজ:
সারা বিশ্বে সবেচেয়ে বেশি কথা বলা হয় যেসব ভাষায় সেগুলোর শীর্ষ ১০০টির মধ্যে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের সিলেটের আঞ্চলিক ভাষা। ‘সিলেটি’ বা ‘সিলটি’ হিসেবে পরিচিত এ কথ্য ভাষাটির স্থান হয়েছে তালিকার ৯৭তম স্থানে। চিত্রের মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপনকারী ওয়েবসাইট ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। শনিবার প্রকাশিত ওই প্রবন্ধে বলা হয়, সর্বাধিক কথিত ১০০ ভাষার তালিকায় ১ কোটি ১৮ লাখ ভাষাভাষী নিয়ে সিলেটির অবস্থান ৯৭তম। তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের আরো একটি আঞ্চলিক ভাষা, চাটগাঁইয়া পরিচয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কথ্য ভাষার স্থান এ তালিকায় ৮৮তম। চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলেন ১ কোটি ৩০ লাখ লোক। দুটো ভাষারই স্থান হয়েছে ইন্দো ইউরোপিয়ান গোত্রে।
বিশ্বের জনসংখ্যার হিসেব রাখা প্রতিষ্ঠান ইথনোলগের ২২তম সংস্করণ থেকে ভাষার এ তথ্য নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের ৭ হাজার ১১১টি ভাষা থেকে সর্বাধিক ব্যবহারকারী হিসেবে এই ১০০টি ভাষার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ভাষার তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কথা বলা হয় ইংরেজি ভাষায়। প্রথম স্থানে থাকা এ ভাষায় কথা বলে ১১৩ কোটি মানুষ। দ্বিতীয় স্থানে মান্দারিন চাইনিজ ভাষায় কথা বলে ১১১ কোটি মানুষ। তৃতীয় স্থানে হিন্দিতে কথা বলে ৬১ কোটি মানুষ। চতুর্থ স্থানে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলে ৫৩ কোটি মানুষ। এ তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলা ভাষা। সারা বিশ্বে প্রায় ২৬ কোটি মানুষের মুখের ভাষা বাংলা।
সিলেটি ভাষা শুধু বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ নয়। ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকায় প্রচলিত ভাষা এটি। এছাড়া সিলেট সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা রাজ্যেও এ ভাষার চর্চা হয়। পার্শ্ববর্তী মণিপুর ও নাগাল্যান্ড রাজ্যের কিছু অংশেও সিলেটি ভাষার ব্যবহার হয়। এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও সিলেটি ভাষা একেবারে ‘অপাঙক্তেয়’ নয়। বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক স্থানেই প্রবাসীদের মধ্যে সিলেটি ভাষা ব্যবহারের ঝোঁক দেখা যায়। এমনকি যুক্তরাজ্যে অনেকে বাংলা ভাষা বলতে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষাকেই বুঝে থাকেন। সিলেটি আঞ্চলিক ভাষার বদৌলতেই যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবেও স্থান করে নিয়েছে বাংলা।
বাংলার একটি উপভাষা হলেও বাংলা ভাষার মূল রীতির সাথে সিলেটি ভাষার বেশ পার্থক্য দেখা যায়। বাংলা ভাষার প্রমিত রীতির ভিত্তি নদীয়া তথা পশ্চিমাঞ্চলীয়। আর সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় রয়েছে পূবের প্রভাব।