ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে ফের চালুর বিষয়ে সমীক্ষা
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০১:৫০,অপরাহ্ন ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সুরমা নিউজ:
পাথর খেকোদের লোলুপ দৃষ্টির কারণে বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জের ঐতিহ্যের ধারক ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকা। যত্র-তত্র পাথর উত্তোলনের ফলে এরই মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ধলাই নদের পাড়ের স্থাপনাটির বেশ কিছু এলাকা। হেলে পড়েছে রোপওয়ের অনেক খুঁটিও। পাশাপাশি সংরক্ষিত প্লান্ট এলাকার মূল্যবান যন্ত্রাংশ ও লোহা লক্করও খোয়া গেছে অনেক আগেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, সংরক্ষিত এলাকা থেকে পাথর উত্তোলনের ফলে ইতিমধ্যে প্লান্ট এলাকার দুই-তৃতীয়াংশ ভূমি ধলাই নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে প্লান্ট এলাকার প্রধান চুল্লী পাওয়ার হাউস, আবাসিক ভবন, মসজিদ, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে ওই এলাকায় পাথর উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ আছে।
১৯৬৪-৬৯ সালে সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১৮ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও টাওয়ার এক্সক্যাভেশন প্লান্টের সংখ্যা ছিল ১২০টি। ভোলাগঞ্জে লোডিং স্টেশন (বাঙ্কার) থেকে পাথর বাকেটে করে সরাসরি পাশ্র্ববর্তী উপজেলায় ছাতকে খালাস স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হতো। তবে ১৯৯৪ সালের পর থেকে এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন-পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এটি এখন ধ্বংসের পথে।
এ রোপওয়ের মালিকানায় রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রায় দুই যুগ থেকে বন্ধ থাকা পুরনো রোপওয়েটি ফের চালু করতে সমীক্ষা চলছে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন এমপি। রোববার ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে পরিদর্শনে রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকার নিচে রক্ষিত পাথর সংরক্ষণেরও উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান।
তিনি বলেন, পুরনো এ রোপওয়ে পুনরায় চালু কতটুকু ভায়েবল (যথোপযুক্ত) হবে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর এটি চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্যই তিনি সরেজমিনে রোপওয়েটি পরিদর্শনে এসেছেন। মন্ত্রী রোপওয়ের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনের পাশাপাশি ধলাই নদী ও এর আশ-পাশের এলাকাও ঘুরে দেখেন। এসময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামানসহ রেলের পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও তার সাথে ছিলেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য জানান, মন্ত্রী রোপওয়েটি সরেজমিনে পরিদর্শনের পর বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হন। রোপওয়ে সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) আবাসিক শেডে বিদ্যুত সংযোগ প্রদান এবং তাদের একটি নৌকা প্রদানের আশ্বাসও দিয়েছেন।