‘দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে খুব ক্লান্ত মা, এবার সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি ঢুকবো।’
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মে ২০১৯, ৬:৫৭ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার:
ইউরোপ যাত্রা পথে পুত্রের সলিল সমাধি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মা। পরিবারের ছোট ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা মা রাজনা বেগম। পুত্র শোকে অনবরত বিলাপ করছেন তিনি। বার বার বলছেন শেষবারের মত আমার পুয়ার (ছেলের) মুখটা দেখতাম চাই। গ্রামের লোকজনও ঘটনা জানতে এসে শান্তনা জানানোর ভাষা হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) সেহেরির সময় ছেলের সাথে ফোনে শেষ কথা হয় মায়ের। শামীম মায়ের থেকে দোয়া নিয়ে বলেছিলেন, দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে আমরা খুব ক্লান্ত মা। এবার সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি ঢুকবো। এটাই ছিলো মায়ের সাথে ছেলের শেষ কথা।
জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বাদে ভুকশিমইল গ্রামে মৃত আব্দুল খালিকের সাত পুত্রের মধ্যে সবার ছোট হাফিজ মো. শামীম আহমদ। তিনি সিলেট গোটাটিকর সরকারি মাদ্রসার দাখিলের (১০ম শ্রেণির) ছাত্র ছিলেন। শামীমের এবার দাখিল পরিক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিলো।
তিউনিসিয়ায় ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে ৬০জনের বেশি নিহত হন। এর মধ্যে বেশির ভাগ বাংলাদেশি বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে ছয়জন সিলেট ও মৌলভীবাজারের।
পারিবারিক ভাবে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দালালের মাধ্যমে তাকে ও বড় ভাই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের শ্যালকের সঙ্গে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে তারা তিনদিন আগে ইতালির উদ্দেশে রওনা করেন আরেক দালালের মাধ্যমে। তারপর জানা গেলো তিনি (শামীম) তিউনিসিয়ায় নৌকা ডুবিতে নিহত হয়েছেন। তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারাও নিহত হয়েছেন।