সিলেটে ভালোবেসে বিয়ে, অতঃপর ডিভোর্স দিয়েও রেহাই পাচ্ছেন না লিপি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মে ২০১৯, ২:৪৯ পূর্বাহ্ণ
ওয়েছ খছরু:
ভালোবেসে কবিরকে বিয়ে করেছিলেন লিপি। স্বপ্ন ছিল সুখের ঘর বাঁধবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে দুই বছর আগে। ডিভোর্স দিয়েছেন কবিরকে। কিন্তু এখন এই কবিরের যন্ত্রণায়ই জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে তার। কবির ডিভোর্সি স্ত্রী লিপির কাছে আবার সব চায়। সঙ্গে চায় টাকাও। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে কবিরের বিরুদ্ধে তিনি মামলাও করেন।
পুলিশ তাকে দুই দফা গ্রেপ্তার করে কারাগারেও পাঠায়। কিন্তু পরিবর্তন আসেনি কবিরের। উল্টো জেল থেকে বের হওয়ার পর আবার লিপির জীবনকে বিষিয়ে তুলেছেন তিনি। কবিরের এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ লিপি বাধ্য হয়েছেন সংবাদ সম্মেলন করতে। যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনসহ সকল মহলের সহযোগিতাও কামনা করেছেন।
লিপির বাড়ি সিলেট শহরতলির মেজরটিলার সৈয়দপুর গ্রামে। তার পিতা মরম আলী। লিপির পুরো নাম মরিয়ম আক্তার লিপি। লিপির সাবেক স্বামী কবির আহমদ। কবিরের বাড়ি কানাইঘাটের দুর্লভপুর গ্রামে। তার পিতার নাম হাজী সিরাজ উদ্দিন। সিলেট নগরীর সোনারপাড়া আবাসিক এলাকায় সোনিয়া বিউটি পার্লার নামে লিপির মালিকানাধীন একটি বিউটি পার্লার রয়েছে। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে লিপির পরিচিতি রয়েছে। কয়েক বছর আগে ভালোবেসে কানাইঘাটের কবিরকে বিয়ে করেন মরিয়ম আক্তার লিপি। প্রথম প্রথম তাদের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু কবিরের বহুগামিতা ও অতিলোভ লিপির জীবনকে বিষিয়ে তোলে। লিপি নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, কবির আহমদের সঙ্গে তার দুই বছর পূর্বে ডিভোর্স হয়ে যায়। বিচ্ছেদের কিছুদিন পর কবির আহমদ তার পিছু নেন। কারণে-অকারণে তাকে বিরক্ত করতে থাকেন।
সাবেক সম্পর্কের দোহাই দিয়ে সোনারপাড়াস্থ মরিয়মের মালিকানাধীন সোনিয়া বিউটি পার্লারে আসা যাওয়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে কাকুতি-মিনতি করে তার কাছ থেকে টাকা ধার নিতে শুরু করেন। প্রতারক কবির আহমদ নিজের একেক সময় একেক পরিচয় দিয়ে থাকেন। কখনো সাংবাদিক, কখনো গোয়েন্দা আবার কখনোবা র্যাব কর্মকর্তা। আর এসব পরিচয় দিয়ে নিরীহ মানুষের কাছ থেকেও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন। প্রায় সময় কবির নিজেকে সিলেটের বড় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের প্রতারণা করতে থাকেন। লিপি জানান, সমপ্রতি অসুস্থতা জনিত কারণে নগরীর ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে তার সঙ্গে খারাপ এবং অশালীন আচরণ করেন কবির। তার অনৈতিক আচরণে বাধা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। কবির আহমদের সঙ্গে সংসার চলাকালে তার নিজের ও চারিত্রিক উন্নতির জন্য লিপি তার পরিশ্রমের টাকা দিয়ে তাকে ওমরা হজ করান।
কানাইঘাট পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে কবির আহমদ অংশ নিলে নির্বাচনের সকল ব্যয়ভার তিনি বহন করেন। এ কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায় তিনি তার উপর কোনো আক্রোশ রাখেননি। কিন্তু কবির আহমদ তার সম্পদের লোভে পড়ে তালাক প্রদান করার পরেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। বছর খানেক পূর্বে পাওনা টাকা চাইতে গেলে কবির সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে লিপির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করেন। এ ব্যাপারে লিপি শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে জেল খেটে বের হয়ে আবারো তার পিছু নেয় কবির আহমদ। কবির আহমদ টাকার বিনিময়ে কিছুসংখ্যক পুলিশকে ম্যানেজ করে লিপিকে হয়রানি করে যাচ্ছেন। কয়েকদিন পূর্বে লিপির ছোট বোন সুলতানার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়েও হুমকি ও তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন কবির আহমদ। এদিকে প্রতারক ও বিকৃত রুচির কবির আহমদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বিনীত অনুরোধ জানান লিপি। এ ব্যাপারে কবির আহমদ বলেন, লিপির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল, সেই বিয়ে ভেঙে গেছে। বিয়ের কয়েক মাসের মাথায় আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স হয়। এরপর থেকে লিপির সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। লিপিকে উত্ত্যক্ত করার প্রশ্নই ওঠে না বলে দাবি করেন তিনি।