সিলেটের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সংরক্ষণের পক্ষে মুহিত-মোমেনের ভাই মুবিন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ মে ২০১৯, ১০:৪৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের দেড়শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা প্রাচীন আবু সিনা ছাত্রাবাস ভবন সংরক্ষণের পক্ষে মত দিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মা’ল আব্দুল মুহিতের ছোট ভাই এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বড় ভাই ড. একে আব্দুল মুবিন।
শুক্রবার রাত ৯টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলনকক্ষে এই ভবন রক্ষায় চলমান আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে তিনি ঐতিহ্যবাহী এই স্থাপনা রক্ষার দাবি জানান।
ড. মুবিন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ছোট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন-এর বড় ভাই। দীর্ঘদিন ব্যাক্তিগত সফরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি দেশে ফেরেন। শুক্রবার দুপুরে সিলেট এসেই তিনি ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তাঁর সাথে ছিলেন- জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ইমাম মেহেদী চৌধুরী, সিলেটের ঐতিহ্য রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ নাগরিক সমাজ-এর মুখপাত্র ও ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডা. মোস্তাফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক-এর সংগঠক রানা ফেরদৌস চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট-এর রুবাইয়াৎ আহমেদ প্রমুখ।
ভবন পরিদর্শন শেষে ড. মুবিন স্থানীয় মিডিয়ার সাথে সাক্ষাৎকার কালে বলেন, ইতিহাস রক্ষা ঐতিহ্য রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য, এই শহরের মানুষ হিসাবে এই ভবন রক্ষায় যা যা করা প্রয়োজন তা আমরা করবো। তিনি এই ভবন রক্ষার জন্য সিলেটের নাগরিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করেন। এ সময় সিলেটের ঐতিহ্য রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ নাগরিক সমাজ-এর পক্ষ থেকে আয়োজিত একটি মতবিনিময় সভায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি তাৎক্ষণিকভাবেই সম্মতি প্রদান করেন।
রাতে নগরীর চৌহাট্টাস্থ একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে সে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. মুবিন-এর সহপাঠি ও গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী।
বাংলাদেশ জাসদ-এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক জাকির আহমদ-এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া মতবিনিময় সভায় আবু সিনা ছাত্রাবাস ভবন রক্ষার আন্দোলন ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. এ কে আব্দুল মুবিন বলেন, ‘সিলেটের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যাক্তিবর্গ এই বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে ঐতিহ্য সুরক্ষার এ সভায় উপস্থিত হয়েছেন দেখে আনন্দিত হয়েছি। ইতিহাস-ঐতিহ্যের গুরুত্ব সবাই উপলব্ধি করবে না এটাই স্বাভাবিক। জালালাবাদ এসোসিয়েশন সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ঐতিহ্য রক্ষার জন্য জনপ্রশাসনের গুরুত্বপুর্ণ সাবেক সচিব সোহেল আহমদ চৌধুরীকে আহবায়ক করে জালালাবাদ এ্যাসোসিয়েশন ইতিমধ্যে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করেছে। আমাদের সদ্য সাবেক সভাপতি সি এম তোফায়েল সামি ও আমাদের কোষাধক্ষ্য ইমাম মেহদী চৌধুরী এই দাবির সাথে পূর্বেই একাত্মতা জানিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা সরকার অচিরেই আবু সিনা ছাত্রাবাস ভবন সংরক্ষণ করে যানজটমুক্ত স্থানে প্রস্তাবিত ২৫০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানাবে।’
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাসদ সিলেট জেলা সভাপতি লোকমান আহমদ, বাংলাদেশ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ই.ইউ শহিদুল ইসলাম, ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডা. মোস্তাফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি আরিফ মিয়া, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ধীরেণ সিংহ, ওয়াকার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য কমরেড সিকান্দর আলী, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা আহবায়ক উজ্জ্বল রায়, বাসদ জেলা সমন্বয়ক আবু জাফর, জাসদ সাধারণ সম্পাদক কে.এ কিবরিয়া চৌধুরী, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কোষাধক্ষ্য ইমাম মেহদী চৌধুরী সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমেদ মিশু, সিপিবির যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল হাসান, নাগরিক মৈত্রীর আহবায়ক সমর বিজয় সী শেখর, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, লেখক-গবেষক সৈয়দ মবনু, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি সিলেট শাখার সভাপতি এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর সদস্য এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সুয়েব, বাসদ জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী প্রণব জ্যোতি পাল, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট-এর সংগঠক রুবাইয়াৎ আহমেদ প্রমুখ।
সভা শেষে ড. এ কে আব্দুল মুবিন আবু সিনা ছাত্রাবাস ভবনকে ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবীতে চলমান গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেন।