সিলেটে কদর বেড়েছে পাঠাও-উবারের
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ৩:৫৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সাত দফা দাবিতে সোমবার ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগে কর্মবিরতি পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি। এ কারণে সকাল থেকে নগরীতে বাস-অটোরিক্সা চলাচল করছে না। তবে, নগরীতে যথারীতি রিক্সা চলাচল করছে। এই সুযোগে তারা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।
একই ভাবে রাইড শেয়ারভিত্তিক অ্যাপস কোম্পানি পাঠাও-উবারেরও কদর বেড়েছে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে। যানবাহন না থাকায় যাত্রীরা নিরূপায় হয়ে রাইড শেয়ারিংয়ের বাইকে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অধিকাংশ রাইড শেয়ারকারী চালকরা অ্যাপসের মাধ্যমে না গিয়ে চুক্তিভিত্তিকভাবে যাতায়ত করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সিলেটে বর্তমানে তিনটি রাইড শেয়ারিং সার্ভিস চালু রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- পাঠাও, উবার এবং ওভাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উবারের কয়েকজন চালক বলছেন, ‘উবারে অ্যাপসভিত্তিক চললে অনেক সময় যাত্রী দূরে দূরে থাকে। এতে সময় বেশি লাগে। কিন্তু চুক্তিভিত্তিক যাত্রী নিলে সে সময় লাগে না। এছাড়া লাভও বেশি হচ্ছে। ভাড়াও দ্বিগুণেরও বেশি আসছে। এজন্য আজ তারা চুক্তিতেই যাত্রী পরিবহন করছেন।’
তবে অনেক চালককে অ্যাপসের ভাড়ায়ই যাত্রী পরিবহন করতেও দেখা গেছে। রাইড শেয়ারিংয়ের কাটতি এমন হয়েছে যে একজন যাত্রী নামিয়ে দেওয়া মাত্র আরেকটি রিকোয়েস্ট চলে আসছে। যে কারণে তারা অ্যাপসের মাধ্যমেই বাড়তি টাকা না নিয়েই যাত্রী পরিবহন করছেন বলে জানান।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে রিক্সার আধিক্যের পাশাপাশি মোটরসাইকেলেরও আধিক্য দেখা গেছে। আর এসব মোটরসাইকেলের বেশিরভাগ চালকই রাইড শেয়ারিংয়ের সাথে যুক্ত।
বারুতখানা মোড়ের পাঠাও-রাইড থেকে নামা এক যাত্রী জানান, ‘তিনি মোটরসাইকেলে যাতায়াত খুব কম সময়ই করেন। আজ গাড়ি না পাওয়ায় পাঠাও’র মোটরসাইকেল করে জিন্দাবাজারে এসেছেন। সার্ভিসও ভাল, সময়ও বাঁচল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পাঠাও চালক কানন চন্দ জানান, ‘মাঝে মধ্যে অফিসের কাজ শেষে রাইড শেয়ারিং করতাম। কল আসতো অনেক কম। কিন্তু আজ সকাল থেকে অনেক বেশি কল আসছে।’
উল্লেখ্য, গত শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবের আমিনুর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি পালনের এই ঘোষণা দেন ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক জানান, মৌলভীবাজারের শেরপুরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ঘোরি মো: ওয়াসিম আব্বাস মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার ধারা ৩০২ এর স্থলে ৩০৪ করাসহ সাত দফা দাবিতে এ তারা এ কর্মবিরতি পালন করছেন। তাদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ১০৫ ধারায় জরিমানা পাঁচ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার করা , এক জেলার গাড়ি অন্য জেলায় রিকুইজিশন না করা এবং সড়ক মহাসড়কে চেকিং এর নামে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে পুলিশি হয়রানি, কথায় কথায় পুলিশ কর্তৃক রং পার্কিং-এর নামে হয়রানি, রেকারিং-এর নামে পুলিশের চাঁদাবাজি ও সেতুতে টোল আদায় বন্ধ করা। তিনি জানান, কর্মবিরতি চলাকালে রাস্তায় কোন পিকেটিং করা হবে না।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মোঃ জেদান আল মুসা জানান, পরিবহন শ্রমিকদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে। কোথাও কোন ঝামেলা হচ্ছে না।