লাউয়াছড়ায় ধর্ষণের শিকার সেই ‘নবজাতকের’ মা, অবৈধ পিতা আটক!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ২:১৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ মুখের সামনে থেকে উদ্ধার হওয়া একদিনের কন্যা শিশুটির জন্মাদায়িনী কুমারী কিশোরী মাতাকে খুঁজে বের করেছে পুলিশ। একই সাথে এই কিশোরীকে ধর্ষণ পূর্বক সন্তানের অবৈধ জনমদাতা ওই লম্পটকেও আটক করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা নিয়েছেন বলে জানান শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম।
কিশোরীর বিধবা মা পারুল কর জানান, বড় মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের বাগলপুরে ১৫ বছর বয়সী ছোট মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি জানান, স্বামী না থাকায় খুব কষ্ট করেই চলছিল তার সংসার। জীবিকার সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সুযোগে তার কিশোরী মেয়েকে পাশের বাড়ির সিএনজি ডাইভার দুই সন্তানের জনক অরুণ কর নানা প্রলোভন দেখিয়ে গত এক বছর ধরে ধর্ষন করে আসছে।
এদিকে এ ঘটনায় লেখাপড়া না জানা অবুঝ এ কিশোরী কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই সন্তান সম্ভবা হয়ে উঠে। শুরু হয় গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা। নানা কৌশল করেও রক্ষা হয়নি। অবশেষে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান।
কিন্তু জন্মের আগে তাকে পৃথিবী থেকে তাড়িয়ে দিতে না পারলেও জন্মের পর তাকে নির্জন লাউয়াছড়া বনে নির্বাসনে দেয় অরুণ ও তার অপর দুই সহযোগী।
কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে লাউয়াছড়া বনে শিশুটির কান্না করা ডাক চলে যায় পথচারীর কানে। আর পথচারীরা পুলিশের সহায়তা তাকে উদ্বার করে নিয়ে আসেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে জানান, ওসি তদন্ত সোহেল রানা।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতলে। আর বর্তমানে সে সুস্থ রয়েছে।
এদিকে এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় বইলে অভিযানে নামে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম ও ওসি তদন্ত সোহেল রানা সংগীয় অফিসারদের নিয়ে কৌশলী অভিযান পরিচালনা করে ৫দিনের মাথায় রবিবার রাতে খুজে বের করেন শিশুটির মাকে। একই সাথে ওই রাতেই আটক করেন ওই ধর্ষনকারী অরুনকে।
ওসি কে এম নজরুল ইসলাম জানান, তারা মামলা নিয়েছেন। ধৃত অর্জুন এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকায় আরো একজনের নাম বলেছে তাই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুটির অভিবাক নিশ্চিত করা হবে।
এদিকে ওই শিশুটিকে বনে নিয়ে ফেলা ও ওই কিশোরী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ৩জনকে আসামী করে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দিয়েছেন কিশোরীর মা।
ধর্ষক অরুনের বিচার হবে এবং শিশুটির ভবিষত জীবনের পথ করে দিবেন সরকার এমটা চাওয়া এ জেলার মানবাধিকার কর্মীদের।