সিলেটে পানির জন্য হাহাকার, ভোগান্তিতে জনসাধারণ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ৯:২৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটে মিলছে না খাবার পানি। অন্য এলাকা থেকে কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাসা থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের। এমন পানি সংকট নগরীর বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায়। গত কয়েক মাস থেকে এ এলাকায় পানি সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নিয়মিত খাবার পানি না পাওয়ায় হাহাকার করছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্নভাবে পানি সংগ্রহ করে চলছে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ।
সিটি কর্পোরেশনের পানির লাইনে দিনে অন্তত দুইবার পানি আসার কথা থাকলেও কোন কোন দিন একবারও পানি পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ওই এলাকার বাসিন্দাদের। বিগত কয়েক মাস থেকে এলাকার বাসিন্দারা এভাবে কোনোমতে দিনাতিপাত করলেও এখন পানি প্রায় একেবারে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিনে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কোন ঘরেই নেই পানি। সিটি কর্পোরেশনের পানির লাইনে পানি না পাওয়ায় এলাকার মসজিদসহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি সংগ্রহ করে রাখছেন অনেকে। এমনকি পানির অভাবে গোসল করাসহ জরুরি বিভিন্ন কাজে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সকলকেই। তবে মূল সরবরাহ লাইনের পার্শ্ববর্তী বাসাবাড়িতে মাঝে মাঝে খুব অল্প পরিমাণে পানি আসলেও মূল সরবরাহ লাইন থেকে যারা দূরে তারা একেবারেই পানি পাচ্ছেন না।
এসময় কথা হয় নরসিংটিলা এলাকার বাসিন্দা রাজিয়া বেগমের সাথে। অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে রাজিয়া বেগম বলেন, ‘কয়েক মাস থেকে আমরা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। দিনে দুইবারের জায়গায় মাত্র অল্প সময়ের জন্য একবার পানি আসতো। আর এখন পানি আসছেই না। এরকম হলে কি করে চলি?’কেবল রাজিয়া বেগমই নয় পুরো নরসিংটিলা এলাকার মানুষেরই একটাই কথা, এতো গরমে পানির সংকট কোনভাবেই সহ্য করা যাচ্ছে না।
নরসিংটিলা এলাকার বাসিন্দা তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে যাদু বলেন, এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে আছে। পানির অভাবে গোসলসহ যাবতীয় কাজ করাটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাছাড়া গত কয়েক মাস থেকে সংকট আরো বাড়ায় দুর্ভোগ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এলাকার মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে হলেও এর দ্রুত সমাধান করা উচিত। তবে এলাকার মানুষের কষ্টের কথা স্বীকার করে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারিদের গাফিলতিকে দায়ী করছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান।
তিনি বলেন, ‘আমার এলাকায় কোনো দিন পানির সংকট ছিল না। তবে গত কয়েক মাস থেকে পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এসব বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেও কোন সমাধান হচ্ছে না। তিনি বলেন, পানি সংকটের একমাত্র কারণ হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি। তারা নিয়মিত ডিউটি করে না। তাছাড়া আমাদের এলাকার পানির লাইন থেকে অন্য এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয়। যে কারণে এ সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ সকলের সাথে বারবার আলোচনা করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানান কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান। তবে মেয়র বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, এই এলাকায় পানির লেয়ার অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় এটা হচ্ছে। তবে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে প্রডাকশন ডিপ টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটা করা হলে পানি সংকট কিছুটা কমবে। তবে এজন্য আরো সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে জানান তিনি।