বঙ্গবন্ধুকে নিজ হাতে রান্না করে খাইয়েছিলেন সিলেটের রুবি ফাতেমা
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৫৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
বয়সে তখন তরুণ। বাবা তার জাদরেল রাজনীতিবিদ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত আস্থাভাজন। সিলেট আওয়ামী লীগের কান্ডারি। স্বাধীনতার পূর্ববর্তি ১৯৭০ সালের সেই উত্তাল সময়ে এবং স্বাধীনতাকালীন সময় ১৯৭১ সালের রক্তঝরা দিনগুলোতে যিনি অবিভক্ত সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
সেই নেতা এডভোকেট হাবিবুর রহমানের (তোতা উকিল) কন্যা তিনি। রুবি ফাতেমা ইসলাম। বাবার মতো জাদরেল নেতা না হলেও তারও ছিল বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। তিনি ছিলেন সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তিনি রাজপথে ছিলেন অকুতভয় সৈনিক। সভা, সমাবেশ, মিছিলে সরার আগে থাকতেন তিনি। সেই নেত্রী রুবি ফাতেমা ইসলাম মঙ্গলবার আকষ্মিক চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুতে মূহ্যমান সিলেট মহিলা আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার বাদ এশা তার গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ সুরমার লাউয়াই জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ দিন বেলা ২টায় নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানসহ বহু আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী
রেখে গেছেন। রুবি ফাতেমা ইসলাম সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুল ইসলাম তোফার স্ত্রী। তিনি জাতীয় মহিলা সংস্থা সিলেট-এরও চেয়ারম্যান ছিলেন।
রুবি ফাতেমা ইসলামের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, তার বাবা এডভোকেট হাবিবুর রহমান বৃহত্তর জৈন্তায় তোতা উকিল নামে পরিচিত ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম এমপি তথা সিলেট-৪ (কানাইঘাট, জৈন্তা ও গোয়াইনঘাট) আসন থেকে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্য ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সিলেট সফরে গেলে তাদের বাসায় সাধারণত
আতিথেয়তা গ্রহণ করতেন। এসময় তিনি নিজ হাতে রান্না করে বঙ্গবন্ধুকে খাইয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু তনয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন। শেখ হাসিনা তার উপর ভরসা করে সিলেটে মহিলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব দিয়েছেন এবং কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য করেছেন।
রুবি ফাতিমা ইসলামের সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, ভাষাসৈনিক, গবেষক আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, তিনি একটি বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ঐতিহ্য বহনকারী পরিবারের সন্তান। আজীবন তিনি আওয়ামী রাজনীতিকে মনে প্রাণে ধারণ করেছেন, দলের প্রতি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক বিবৃতিতে বলেন, রুবি ফাতিমা ইসলামের মৃত্যুতে জাতি একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো। তিনি ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, মহিলা নেত্রী হিসেবে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য রুবি ফাতেমা ইসলাম বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন ও আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন। তার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ একজন আদর্শবান, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেত্রীকে হারালো।
মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহানারা বেগম বলেন, মহিলা নেত্রী হিসেবে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য রুবি ফাতেমা ইসলাম বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন ও আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন।