বাংলাদেশে জঙ্গিদের আয়ের উৎস একাধিক খাত
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০১৬, ৪:৫৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারের আমলে জঙ্গিদের তৎপরতা দেখা গেছে। তবে সম্প্র্রতি তাদের তৎপরতা ঠেকাতে বেগ পেতে হচ্ছে সরকারকে। কারণ বর্তমানে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়েছে।
জানাযায়, মাত্র এক বছরেই ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) নামে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ সৌদি আরব, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। ২০০৮ সালে ওই অর্থ দিয়েছে দুই ব্যক্তি ও দুটি এনজিও।
অভিযোগ আছে, দুই ব্যক্তির মধ্যে একজনের প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে হামলায় আল-কায়েদাকে অর্থ দিয়েছিল। এনজিও দুটিও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীদের অর্থায়ন করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। আইআইইউসির নামে আসা অর্থ কোন খাতে খরচ হয়েছে তা নিয়েও রয়েছে অভিযোগ।
আইআইইউসি ছাড়াও এ ধরনের অর্থ পাওয়ার সন্দেহের তালিকায় আছে রাজধানীর সাত-আটটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে কয়েক বছর ধরে বিপুল পরিমাণ অর্থ আসছে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে। যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আসছে তাদের নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেক দেশেই এসব প্রতিষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একাডেমিক ভবন, হোস্টেল নির্মাণসহ নানা কাজের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ এলেও তা ব্যয়ের সঠিক হিসাব দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শুধু তাই নয় সাম্প্রতিক বিভিন্ন কোম্পানি ও এনজিওর মাধ্যমে জঙ্গিদের কাছে ইসরাইল থেকে অর্থ আসে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া দেশে জঙ্গি তৎপরতা চালাতে নামে-বেনামে চাঁদা ও অনুদান তুলছে জঙ্গিরা। এক্ষেত্রে ফান্ড সংগ্রহে নানা কৌশল নিচ্ছে তারা। বিভিন্ন উপায়ে বিদেশ থেকে আসছে মোটা অঙ্কের চাঁদা। আবার দেশেও ‘সমমনা’ ব্যক্তিদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা তুলে ফান্ড গঠন করছে উগ্রপন্থীরা। ফেসবুকেও বিভিন্ন গ্রুপ খুলে অর্থ বা তহবিল সংগ্রহ করছে তারা।
মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব নম্বর দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছে একাধিক গ্রুপ। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে ডাকাতি এবং ছিনতাই, চাঁদাবাজি বা দেশী-বিদেশী এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে অর্থ ব্যয় করছে জঙ্গিরা। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় এমন ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব নম্বরে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গোয়েন্দাদের ধারণা, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে সংক্ষুব্ধ কোন রাজনৈতিক মহল জঙ্গিদের অর্থায়ন করতে পারে। শুধু তাই নয়, জঙ্গিরা নিজেদের ফান্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে।
সূত্রে জানা গেছে, সংগঠনের কর্মকাণ্ডসহ যাবতীয় খরচ যোগাতে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গিরা। জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্যরা অর্থায়নের জন্য ছিনতাই, মোটরসাইকেল ও গাড়ি চুরির পাশাপাশি এ অঞ্চলের মাজারগুলোও টার্গেট করছে। কোন কোন মাজারে তারা নিজেদের নিরাপদ রাখতে ছদ্মবেশে রক্ষণাবেক্ষণকারীর দায়িত্ব পালন করছে। আবার কোন কোন মাজারের খাদেমের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে।
এদিকে বাংলাদেশে জঙ্গিদের পরামর্শদাতা মেজর জিয়া ও তামিম চৌধুরী সম্পর্কে তথ্য দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ।
রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জানা যায়, তামিম প্রায়ই তাদের ঐ আস্তানায় যেত এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ছাড়াও অর্থের যোগান দিতো। এছাড়া সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্তকৃত মেজর জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে নিখোঁজ।