ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার অংশের বেহাল দশা
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২৫:৩৯,অপরাহ্ন ০১ আগস্ট ২০১৬
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার এলাকার এখন বেহাল দশা। মহাসড়কটি দেখলে মনে হয় খানাখন্দে ভরপুর গ্রামের একটি সড়ক। মহাসড়কের দুটি টোল প্লাজার চারিদিকে খানাখন্দে ভরপুর। এবড়োথেবড়ো সড়কটি একটু বৃষ্টিতে পানি জমে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিদিনই সংস্কার কাজ করলে পরদিনই আবারো এসব জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। প্রতিদিনই মহাসড়কের এসব জায়গায় দুঘর্টনায় প্রাণহানিসহ অনেকেই পঙ্গু হচ্ছেন।
বিশেষ করে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার অংশের বিভিন্ন স্থানে বেহাল দশা বিরাজ করছে। টোল প্লাজা দুটি হচ্ছে, নবীগঞ্জের মহাসড়কের রোস্তমপুর টোলপ্লাজা ও শেরপুর কুশিয়ারা নদীর অপারে টোল প্লাজা।
নবীগঞ্জ উপজেলার শেরপুর অংশ থেকে শুরু করে আউশকান্দি বাজার এলাকা, মিনাজপুর, জালালপুর, সৈয়দপুর, গোপলার বাজার, দেবপাড়া বাজার, ফুলতলী বাজার, পানিউমদা বাজার, বড়চর, বাহুবল, মীর পুর এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কটি ভেঙে খানাখন্দে ভরপুর হয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে এক থেকে দেড় ফুট বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গ্রামের মেঠোপথের সৃষ্টি হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে যায়। এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই হাজার হাজার যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে।
একমাস মাস আগে নামে মাত্র মেরামত করা হলেও বর্তমানে এর বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। এ যেন এক অভিভাবকহীন এক মহাসড়ক! কেউ যেন এর দায় নিতে রাজি নয়। খানাখন্দ আর যত্রতত্র গর্তে পুরো রাস্তা যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যাত্রীবাহী বাসসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকবাহী গাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন রকম যানবাহন প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
মহাসড়কের হানিফ বাসের চালক রহিম আলী বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনাতায় সড়কটির এমন অবস্থা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাই। যাত্রী অনেক সময় চিৎকার আর হইচই করতে দেখি। মামুন গাড়ির চালক কুতুব আলী বলেন, ‘কি করমু বলেন। এসড়কে একদিন গাড়ি চালালে তিনদিন যায় শরিলের (শরীর) ব্যথায়। আর যাত্রীর অবস্থা তো আর বললাম না। তারা অনেকেই বিকল্প সড়কে বাস নিতে অনুরোধ করেন যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে।’ ট্রাকচালক কদর আলী বলেন, আমরা মাল বোঝাই ট্রাক এসড়কটি দিয়ে নিতে চাই না তবু পেটের কারণে নিতে হয়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো ট্রাক দুর্ঘটনায় পড়ছে। যাত্রী আব্দুল আলী বলেন, ভাঙা সড়কটি দিয়ে বড় বড় ট্রাক চলাচলের জন্যেই আরো খারাপ হচ্ছে। দ্রুত মেরামত করা না হলে মহাসড়কের নবীগঞ্জ অংশটি অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
মহাসড়কের এসব গর্ত সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের নজরে পড়লে রাস্তা সংস্কারের জন্য মাঝে মধ্যে দেখা যায় শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের মাল ব্যবহার করে নামমাত্র কাজ করার ফলে মাস খানেক যেতে না যেতে আবার পুনরায় রাস্তায় গর্তসহ খানাখন্দে পরিণত হয়ে যায়।
নবীগঞ্জ-বাহুবল এলাকার সংসদ সদস্য আব্দুল মুনিম চৌধুরী বাবু বলেন, জনস্বার্থে আমি মহাসড়কের কথাটি জাতীয় সংসদে তুলে ধরব। প্রয়োজনে আমি জন গুরুত্বপূর্ন নোটিশ দিয়ে সড়ক,সেতু ও পরিবহন মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব।
এব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দুর রহমান বলেন, আমরা এসড়কের অবস্থা যোগযোগ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তারা সড়ক জনপদ বিভাগের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেবেন। সংস্কারে অনিয়ম সম্পর্কে বলেন, এটা মন্ত্রণালয়ের লোকজন মনিটরিং করেন।