আবুধাবিতে ওয়ার্ল্ড হালাল ট্যুরিজমের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবে এক্সেলসিয়র সিলেট
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০১৬, ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ
জুবায়ের আহমেদঃ
আগামী ২২ ও ২৩ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ার্ল্ড হালাল ট্যুরিজমের দুদিনব্যাপী ২য় শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনে বিশ্বের ১০৩টি দেশের ট্যুরিষ্ট ও ট্রাভেল প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে অংশ নেবে এক্সেলসিয়র সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্ট।
২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে ৬৮টি দেশ অংশ নেয়। সম্মেলন ও প্রদর্শনীতে ২৯৮২ জন দর্শনার্থী এবং ২০২ জন প্রদর্শক অংশগ্রহণ করেন। এতে এক্সিবিটর বা প্রদর্শকরা ৭৩.৫ মিলিয়ন ডলারের আগাম ব্যবসা ও ১৮.৪ মিলিয়ন ডলারের তাৎক্ষণিক অর্ডার লাভ করেন।
ওয়ার্ল্ড হালাল ট্যুরিজম সামমিট অর্থাৎ বিশ্ব হালাল পর্যটন শীর্ষ সম্মেলন বিশ্বের পরিবার বান্ধব পর্যটন প্রিয় মানুষকে একত্রিত করার একটি মোক্ষম সুযোগ। যাঁরা শূকরের মাংস ও অ্যালকোহল পছন্দ করেন না, একই সঙ্গে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিশ্বাস ও নিয়ম মেনে চলেন সেসব মুসলিম পরিবারই এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য।
এই শীর্ষ সম্মেলনে পরিবার বান্ধব ট্রাভেল শিল্পকে অনুধাবন এবং এটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে নিবেদিত ট্যুরিজম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, উদ্ভাবক, বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করার পাশাপাশি এক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যা সমাদানে গভীর দৃষ্টিপাত দেয়া হবে।
‘হালাল ট্যুরিজম’ তথা পরিবার বান্ধব পর্যটন বিশ্বের পর্যটনের মধ্যে অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল ক্ষেত্র। মুসলমানদের ভ্রমণ বৃদ্ধি এবং পর্যটন শিল্প সম্প্রসারণের তাগিদ থেকেই মূলত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘হালাল ট্যুরিজম’ । ২০১৯ সাল নাগাদ এই মার্কেট ২৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত। এটি মুসলিম পর্যটক বা ভ্রমণকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুযোগ সুবিধা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর প্রাইমারী সোর্স মার্কেটে বিভিন্ন অমুসলিম দেশ মহাদেশ যেমন- ইওরোপ, আমেরিকা, চীন ও ভারতসহ ওআইসি দেশসমূহ অন্তর্ভুক্ত।
বর্তমান বিশ্ব পর্যটনশিল্পের এক-দশমাংশ হালাল ট্যুরিজম। গত বছর এ খাতে ব্যবসা ছিল প্রায় ছয় হাজার কোটি ডলারের। এ বছর প্রবৃদ্ধি আসবে ৩০ শতাংশ। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু বৃহৎ পর্যটন কম্পানি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মুসলিম পর্যটকদের কাঙ্ক্ষিত স্থান ও হালাল খাদ্য কোথায় পাওয়া যাবে সে তথ্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে হালাল রেস্টুরেন্ট, হোটেল, সুপার মার্কেট, এমনকি নিকটস্থ মসজিদ ইত্যাদি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। একজন মুসলিম সেসব স্থান খুঁজে পাবেন, যেখানে হালাল পণ্য ও হালাল সেবা রয়েছে। ট্যুর অপারেটররাও সেসব বিমানে ফ্লাইট বুকিং দিচ্ছে, যেখানে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় সরবরাহ করা হয় না, নামাজের সময় ঘোষণা করা হয় এবং যাত্রীদের পবিত্র কোরআন সরবরাহ করা হয়। তবে হালাল পর্যটন মধ্যপ্রাচ্য কিংবা মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি এখন বিশ্বের সব দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যটন কম্পানিগুলোও এ ব্যবসা লুফে নিচ্ছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ভালো প্রবৃদ্ধি করছে। সবচেয়ে বেশি পর্যটক যাচ্ছে সৌদি আরব থেকে। যাদের বার্ষিক ব্যয় হয় ৬৭০ কোটি ডলার। এর পরের অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর্যটকরা খরচ করেন ৪৯০ কোটি ডলার। এ ছাড়া তুরস্ক, মালয়েশিয়া, দুবাই, জর্দান এবং তিউনেসিয়ার মতো দেশগুলো মুসলিম পর্যটক আকর্ষণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ইউএনডাব্লিউটিও জানিয়েছে, ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাপী পর্যটক গমন ৪.৭ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১.১৪ বিলিয়ন। সবচেয়ে জোরালো প্রবৃদ্ধি এসেছে এশিয়া থেকে।