দোয়ারাবাজারের সবগুলো সড়কে মারাত্মক ভাঙ্গন, জনদূর্ভোগ চরমে
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৪১:৪৩,অপরাহ্ন ১৫ জুলাই ২০১৬
ছাতক (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী অবহেলিত একটি উপজেলা হচ্ছে দোয়ারাবাজার। এখানে সীমান্তবর্তী এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের ৫নং সাব-সেক্টর ও স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর হিসেবে ঐতিহাসিক স্থান বাঁশতলার হক নগরকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত। গড়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ। এখানে বাঁশতলাসহ সীমান্তবর্তী অঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি হিসেবে সর্বমহলে ব্যাপক সুখ্যাতি রয়েছে। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থার দৈন্যদশায় পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে কাঁচা-পাকা, ছোট-বড় ও গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটসহ প্রায় দেড় শতাধিক রাস্তা রয়েছে। এরমধ্যে সবগুলো রাস্তাই দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার বিহীন অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে প্রতিটি রাস্তা এখন চলাচলের অনুপযোগী। এসব রাস্তায় যানবাহন ছাড়া পায়ে হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না সাধারণ মানুষ।
২০০১সালে দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার (ব্রিটিশ) সড়কে পাকাকরণ করা হলেও এযাবত কোন সংস্কার কাজ হয়নি। এটি উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠির উপজেলা সদরসহ সারা দেশের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম প্রাচীন ব্রিটিশ সড়কটি। এভাবে সংস্কার বিহীন অবস্থায় যুগের পর যুগ পড়ে আছে ছাতকের নোয়ারাই-বাংলাবাজার সড়ক।
১৯৯১সালে নোয়ারাই-বাংলাবাজার সড়ক পাকাকরণ হয়। দীর্ঘদিন এর সংস্কার নেই। এছাড়া নোয়ারাই-নরসিংপুর রাস্তায় এখন যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার বিহীন থাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে কৃষি জমির সাথে মিশে গেছে। এ রাস্তার সিংগেরকাছ গ্রামের কাছে একটি কালভার্টের এপ্রোচে মাটি ভরাট হয়নি প্রায় ৫বছর থেকে। এভাবে দোয়ারাবাজার-বগুলা সড়ক, নরসিংপুর-বাংলাবাজার, নরসিংপুর-চাইরগাঁও, বাংলাবাজার-বগুলা, বালিউরা-নরসিংপুর, চৌমুনা-বেরীগাঁও, দোহালিয়াবাজার-গুরেশপুর, দোহালিয়াবাজার-শিবপুর, দোহালিয়াবাজার-গাংচর-মেন্দা, দোহালিয়াবাজার-ধর্মপুর-মেন্দা, দোহালিয়াবাজার-পান্ডারগাঁও-শ্রীপুর, বড়কাপন-পান্ডারখাল-আজমপুর, পান্ডারখান-শ্রীপুর, আমবাড়ী-কাটাখালী, দোয়ারাবাজার-লক্ষীবাউর-ছাতক, ছাতক-দোহালিয়া-সুনামগঞ্জ, দোহালিয়াবাজার-পানাইল-মঙ্গলপুর, দোয়ারাবাজার-লক্ষীপুরসহ প্রায় দেড় শতাধিক সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দেড় থেকে দু’ফুট গভীর গর্ত হওয়ায় যানবাহন চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ১ঘন্টার রাস্তা যেতে সময় লাগছে ৩ঘন্ট। অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
জানা গেছে, আমবাড়িবাজার-কাটাখালীবাজার হয়ে ছাতকের দূরত্ব ৩০কিলোমিটার। সুনামগঞ্জ থেকে কাটাখালী পর্যন্ত ১৫কিঃমিঃ ইতোমধ্যেই সওজ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল আহমদ জানান। তবে কাটাখালী থেকে ছাতক পর্যন্ত এলজিইডির অধীনে রয়েছে। এরাস্তা নিয়ে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় একাধিকবার আলোচনা হলেও কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। সুনামগঞ্জ থেকে দোয়াবাজারের আমবাড়িসহ প্রতিটি রাস্তার করুন অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে নোয়ারাই-নরসিংপুর রাস্তা সংস্কারের দাবীতে গত ১০জুলাই নরসিংপুর বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এভাবে উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আমিন বলেন, ১৫কিঃমিঃ রাস্তা সওজে হস্তান্তর করা হলেও শহর এলাকার ১৩শ’ মিটার গত বছরে মেরামত করা হয়।
দোয়ারাবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আলী বীর প্রতীক বলেন, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপজেলার সব রাস্তা মেরামতের প্রস্তাব রেখেছি। আশা করি সরকারী বরাদ্ধ আসবে।