বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীঃ বুধবার পদত্যাগ করছেন ক্যামেরন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন থেরেসা মে
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুলাই ২০১৬, ৫:০৯ অপরাহ্ণ
সুরমা ডেস্কঃ
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বুধবারেই বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন থেরেসা মে। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন ডেভিড ক্যামেরন। সোমবার ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে এ কথা বলেন বিদায়ি প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, বুধবার বিকালে তিনি বাকিংহাম প্যালেসে রানীর কাছে জমা দিবেন পদত্যাগপত্র। বিবিসির খবরে বলা হয়, সোমবার কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের নির্বাচন থেকে থেরেসা মে’র প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্দ্রিয়া লিডসম সরে দাঁড়ালে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে বর্তমান বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে-ই হতে যাচ্ছেন করজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা, তথা বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদে ডেভিড ক্যামেরনের উত্তরসূরী। দলের অনেক নেতাই যত দ্রুতসম্ভব থেরেসা মে’র হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিও তুলেছেন। লিডসমের সরে দাঁড়ানোর কয়েকঘণ্টা পরেই প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জানালেন, তিনি বুধবার দায়িত্ব ছেড়ে দিবেন আনুষ্ঠানিকভাবে। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে সংক্ষিপ্ত এক বক্তব্যে ক্যামেরন বলেন, অ্যান্দ্রিয়া লিডসম দলের নেতৃত্বের লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়ে ‘একদম সঠিক সিদ্ধান্ত’ নিয়েছেন। তার উত্তরসূরী হিসেবে থেরেসা মে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তিনি ‘খুশি’ হয়েছেন বলেও জানান এ সময়। ‘নেতৃত্বের পালাবদলের সময় দীর্ঘায়িত’ হওয়ার দরকার নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আগামীকাল শেষ বৈঠকে সভাপতিত্ব করব। বুধবার আমি হাউজ অব কমন্সে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বেও অংশ নিব। এর পর আমি রাজভবনে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিব।’ নিজের বক্তব্যে তিনি থেরেসা মে’কে ‘শক্তিশালী’ ও ‘যোগ্য’ বলে অভিহিত করেন। আগামী বছরগুলোতে যুক্তরাজ্যের যে ধরনের নেতৃত্ব প্রয়োজন তা প্রদানের জন্য থেরেসা ‘প্রয়োজনের চেয়েও বেশি সক্ষম’ বলেও জানান তিনি। ক্যামেরন বলেন, থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করলে তার পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থন থাকবে। উল্লেখ্য, ২৩শে জুন ব্রেক্সিট ইস্যুতে বৃটেনে গণভোটের ফলাফলের পরদিনই ডেভিড ক্যামেরন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ার ঘোষণা দেন। গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন ক্যামেরন। কিন্তু ভোটের ফলাফলে বৃটিশ জনগণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানালে ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে সাংবিধানিক কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও নৈতিক দিক থেকেই তিনি পদত্যাগ করছেন বলে জানান। তারপর থেকেই বৃটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। শুরুতে ধারণা করা হচ্ছিল, লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস এই পদে ক্যামেরনের উত্তরসূরী হতে যাচ্ছেন। ব্রেক্সিট গণভোটে তিনিই ক্যামেরনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। কিন্তু কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিনে তিনি এই লড়াই থেকে অব্যাহতি নেন। তার সমর্থন বিচারমন্ত্রী মাইকেল গোভ জমা দেন মনোনয়নপত্র। শেষ পর্যন্ত লড়াই করেন পাঁচ জন। দুই ধাপের নির্বাচন শেষে শীর্ষ দুই প্রার্থী হিসেবে টিকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে ও জ্বালানীমন্ত্রী অ্যান্দ্রিয়া লিডসম। কিন্তু আজ বৃটেনের স্থানীয় সময় দুপুরে লিডসম লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালে থেরেসা মে’র নেতৃত্ব নিশ্চিত হয়ে যায়। এর কয়েকঘণ্টা পরেই জানা গেল, দুই দিনের মাথাতেই তাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আর তাতে করে বৃটেন পেতে যাচ্ছে তাদের ইতিহাসের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বৃটেনের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বৃটেনের লৌহমানবী হিসেবে খ্যাত মার্গারেট থ্যাচার।