বাংলাদেশের রাজধানীতে হামলায় অবাক হওয়ার কথা নয় : ওয়াশিংটন পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুলাই ২০১৬, ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ
সুরমা ডেস্ক: ঢাকার গুলশানের একটা রেস্টুরেন্টে শুক্রবার রাতে হামলার ঘটনা নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এতে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের পরিপূর্ণ রাজধানী ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ও গ্রেনেড নিয়ে হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার রাতে এ হামলা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে হামলার ফলে কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে ঘটনাস্থলে ছয় থেকে আটজন বন্দুকধারী রয়েছেন। এ ছাড়া ২০ জনকে জিম্মি করারও খবর রয়েছে।
হামলার খবর পেয়ে প্যারামিলিটারি পুলিশ ‘র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন’ ইউনিটের সদস্যরা গুলশানে ছুটে যান। ঢাকার এ এলাকাটি বিদেশি কূটনীতিক ও দেশের ধনী শ্রেণির এলাকা। যে রেস্টুরেন্টটিতে তারা হামলা চালায় তা দিনের বেলা বেকারি ও রাতে স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট হিসেবে কাজ করে।
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি মিডিয়া গ্রুপ থেকে জানা গেছে, ইসলামিক স্টেট এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এ হামলার তথ্য প্রকাশ করেছে, যারা ইসলামিক স্টেটের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। তবে এ বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয় যে, দেশটিতে (বাংলাদেশে) ইসলামিক স্টেট কার্যক্রম চালাচ্ছে কি না।
সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সম্পৃক্ততা সন্দেহ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আল-কায়েদার দক্ষিণ এশিয়া শাখা ও ইসলামিক স্টেট রয়েছে। গত দুই বছরে ইসলামের নামে সন্ত্রাসীরা লোমহর্ষক হামলা চালাচ্ছে। তারা বাংলাদেশে হিন্দু, বুদ্ধিজীবী, মুক্তচিন্তার মানুষ, লেখক ও ব্লগারদের হত্যা করছে।
কিছুদিন আগেই ইসলামিক স্টেট পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে আরও বেশি সন্ত্রাসী হামলা চালানোর কথা জানিয়েছিল তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। এসব হামলার মধ্যে ছিল ইটালিয়ান ও জাপানি নাগরিক ও শিয়া মুসলমান হত্যা।
সন্ত্রাসী সংগঠনটি তাদের সদস্যদের মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজানের কার্যদিবসে নমনীয় লক্ষ্যবস্তুতে বেশি করে হামলার আহ্বানও জানিয়েছিল।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে শুক্রবার জানানো হয়, ঢাকায় একটি রেস্টুরেন্টে জিম্মি সংকটের পেছনে কারা জড়িত, কিংবা কী উদ্দেশ্যে এ হামলা করা হয়েছে, তা বলার সময় এখনও আসেনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার এ ধরনের সমস্যার লাগাম টেনে ধরতে চেষ্টা করছেন। গত মাসে দেশটিতে পুলিশ ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এ অভিযানে ১২ হাজার মানুষকে আটক করা হয়। যদিও এ আটককৃতদের অনেকেই ছোট ছোট অপরাধী।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের হামলার পেছনে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিরোধী রাজনৈতিক দলকে দায়ী করেন যাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি)।
বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মুসলমান দেশগুলোর একটি। এ দেশটির জনসংখ্যা মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। কিন্তু ইস্তাম্বুলে সন্ত্রাসী হামলার পর সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় ইসলামিক স্টেট ও তার সহযোগীদের দিকে। ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকা গুলশানে সংঘবদ্ধ হামলা এ সন্ত্রাসী সংগঠনটির কৌশলকেই প্রতিফলিত করে।