জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে ‘হারাম’ আখ্যায়িত করেছেন লক্ষাধিক মুফতি ও আলেম-ওলামা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২৭:২২,অপরাহ্ন ১৯ জুন ২০১৬
সুরমা ডেস্কঃ জঙ্গিদের জানাজা পড়াও হারাম বলে মত দেওয়ার পাশাপাশি তারা বলছেন, যারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মারা যাবেন তারা শহীদের মর্যাদা পাবেন।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আলেমদের এই ‘ফতোয়া’ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও শোলাকিয়ার ঈদ জামাতের ইমাম মওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
গত দেড় বছরজুড়ে লেখক, প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, অধ্যাপক, বিদেশি, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান যাজক, বৌদ্ধ ভিক্ষুর ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে একই কায়দায় হামলার প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে এ মত পাওয়া গেল।
সংবাদ সম্মেলনে মওলানা মাসঊদ বলেন, “ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলামের নাম ব্যবহার করে কতিপয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নিজেদের
হীনস্বার্থ চরিতার্থের উদ্দেশ্যে মহাগ্রন্থ কোরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
মানুষের চোখে ইসলামকে একটা বর্বর নিষ্ঠুর ও সন্ত্রাসী ধর্মরূপে চিত্রিত করছে। এতে সরলমনা কেউ কেউ বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন।”
জঙ্গিদের অনেকেই ‘জিহাদি’ বললেও তারা আসলে ‘সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইসলাম সন্ত্রাস সমর্থন করে না। আর যারা বেহেশত পাওয়ার আশায় আত্মঘাতী হামলা করছে, বলছে মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী, তারা কোরআন ও হাদিসের আলোকে বেহেশত পাবে না। তাদের স্থান নিশ্চিত দোজখে।
“এমনকি ধর্মের নামে সন্ত্রাসকারী, জঙ্গি, গুপ্ত হত্যাকারীদের জানাজার নামাজ পড়াও হারাম। আর যারা এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মারা যাবে তারাই শহীদ হবেন। ”
এই সংবাদ সম্মেলনে সেই ফতোয়া জানানো হয়
মওলানা মাসঊদ জানান, ‘বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার’ উদ্যোগে বাংলাদেশের এক লাখ এক হাজার ৫২৪ জন মুফতি, আলেম-ওলামা এই ‘ফতোয়া’য় দস্তখত করেছেন।
বিভাগীয় শহরগুলোর নামে ২৬টি এবং শুধু নারী আলেমদের স্বাক্ষরে ‘ফতোয়া’র চারটি খণ্ড তৈরি হয়েছে।
সব খণ্ডেই জঙ্গিবাদ নিয়ে মূল ফতোয়ার সঙ্গে দারুল উলুম দেওবন্দ, মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়া, শায়খ জাকারিয়া রিসার্চ সেন্টার ও জামিয়াতুল আসআদ মাদ্রাসাসহ হেফাজতের ইসলামের নেতাদের ফতোয়াও সংযুক্ত করা হয়েছে।
ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের নেতৃত্বে দস্তখত সংগ্রহ কমিটিতে ছিলেন সদস্য সচিব আবদুর রহিম কাসেমী, যুগ্ম সদস্য সচিব সদরুদ্দীন মাকুনুন, সদস্য আল্লামা আলীম উদ্দীন দুর্লভপুরী, হোসাইন আহমদ, দেলোয়ার হোসাইন সাঈফী, ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, আইয়ুব আনসারী, ইবরাহিম শিলাস্থানী, আবদুল কাইয়ুম খান, যাকারিয়া নোমান ফয়জী।