অনলাইন ডেস্ক: পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় আগুন ধরলে তা কীভাবে ছড়ায় এবং কীভাবে নেভানো লাগে, তা আমরা জানি।
কিন্তু মহাকাশে কখনো কোনো কারণে আগুন জ্বললে, সেক্ষেত্রে কী ঘটতে পারে, তা সকলেরই অজানা। তাই মহাকাশে আগুণ হাত থেকে বাঁচতে এবার মহাকাশে থাকা মহাকাশযানের অভ্যন্তরে আগুন জ্বালিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
এই পরীক্ষার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেসক্র্যাফট ফায়ার এক্সপেরিমেন্ট বা সাফায়ার’। এ লক্ষ্যে মহাকাশে পাঠানো কার্গো যানটির অভ্যন্তরে ইতিমধ্যে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। মহাকাশযানটির একটি বিশেষ অংশে চার ফিট দীর্ঘ, দেড় ফিট চওড়া ও ৩ ফিট গভীর জায়গায় এই পরীক্ষা করা হচ্ছে। মহাকাশে নাসার এটাই সবচেয়ে বড় অগ্নিপরীক্ষা।
বায়ুহীন শূন্য মহাকাশ। তার মাইক্রোগ্রাভিটি অঞ্চলে কীভাবে এই আগুন ছড়িয়ে পড়বে, তাছাড়া সেই আগুন থেকে কীভাবে বাঁচানো যাবে মহাকাশচারীদের- এই উদ্দেশ্যেই নাসার এই উদ্যোগ। আগুনের হাত থেকে রক্ষা মহাকাশে বিচরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে নাসার মঙ্গল অভিযানের মতো দীর্ঘ সময়ের অভিযানের ক্ষেত্রে এটি আরো বেশি করে প্রয়োজন।
মোট ৩টি স্তরে এই পরীক্ষাটি করা হচ্ছে। মার্কিন মহাকাশযান প্রস্তুতকারক সংস্থা এটিকে’র তৈরি ৩টি মহাকাশযান এ কাজে অংশ নেবে। মাইক্রোগ্রাভিটি অঞ্চলে আগুনের শিখা কতটা ছড়িয়ে পড়ছে, তা পরীক্ষা করবেন নাসার বিজ্ঞানীরা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে নিরাপদ দূরত্বেই এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার মহাকাশে কার্গো মহাকাশযানের মধ্যে থাকা বাক্সে আগুন জ্বালানো হয়েছে। বাক্সটির তুলা এবং ফাইবারগ্লাসের দিয়ে তৈরি একটি ‘কম্পোসিট’ বা মিশ্রণে ভরা। বর্তমানে সফলভাবে তা জ্বলছে।
৮ দিন ধরে দহনের পর ওই মহাকাশযানে থাকা বিশেষ যন্ত্র তথ্য সংগ্রহ করবে। নাসার এই প্রকল্পটি মহাকাশচারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন প্রকল্পটির প্রধান গ্রে রাফ।
এছাড়া যে মিশ্রণে আগুন লাগানো হয়েছে, তা মূলত মহাকাশযান নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং যেখানে অক্সিজেনের মাত্রা অত্যন্ত কম, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নগন্য-এমন পরিবেশে আগুনের চরিত্র, গতিপ্রকৃতি, ব্যপ্তি সম্পর্কে জানতে পারলে, ভবিষ্যতের মহাকাশযান নির্মাণেও সুবিধা হবে বলে মনে করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।