‘সিলেটে হত্যা মামলার আসামি এসিল্যান্ড-ওসিকে বাদ দিতে এজাহার পরিবর্তন’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
সিলেটের গোলাপগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ সানি আহমদের পিতা কয়ছর আহমদকে আদালতে দায়ের মামলা তুলে নিতে নানামুখী চাপ দেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে মামলার আসামি এসিল্যান্ড ও ওসিকে বাদ দিয়ে এজাহার পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রোববার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছেন সানির পিতা নিজেই। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন- গত ৪ঠা আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় পুলিশ, বিজিবি ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের দুষ্কৃতকারীরা দেশি-বিদেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশ-বিজিবি’র গুলিতে সানি আহমদ নিহত হয়। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে কর্তব্যরত ডাক্তার না পেয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পর দিন সানি আহমদের লাশ দাফন করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন- ঘটনার পর থেকে স্থানীয় বিএনপি’র কতিপয় নেতাকর্মী বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের তৈরিকৃত এজাহারে স্বাক্ষর প্রদান করে মামলা দায়েরের পরামর্শ দিলে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। ২৫শে আগস্ট উপজেলা তিনি ভূমি অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ রায়, গোলাপগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মাসুদুল আমীন, বিজিবি ও গোলাপগঞ্জের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দাখিলের পর ২৭শে আগস্ট রাতে বিএনপি সমর্থিত জামাল, কবির, স্থানীয় ঢাকা দক্ষিণ ইউপির সদস্য মকবিল মেম্বার তার বাড়িতে গিয়ে থানার বর্তমান ওসি মীর নাসিরের কথা বলে দাখিলকৃত এজাহার মামলা হিসেবে রেকর্ড করার কথা জানিয়ে বেশ কয়েকটি সাদা কাগজে তাদের স্বাক্ষর নেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান- গত ২রা সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে মামলা করলে আদালত গোলাপগঞ্জ থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
আদালতে মামলার পর তিনি জানতে পারেন গোলাপগঞ্জ থানায় দেয়া অভিযোগ আমলে না নিয়ে স্থানীয় বিএনপি’র লোকজনসহ গোলাপগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর জামিল আহমদের ইন্ধনে বিএনপি’র লোকজন আমার সাদা কাগজে নেয়া স্বাক্ষরিত কাগজে এসিল্যান্ড, পুলিশ ও বিজিবিসহ যারা এ হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত তাদেরকে বাদ দিয়ে অন্যদের আসামি করে একটি মামলা রেকর্ড করে নিয়েছে পুলিশ। থানার বর্তমান ওসি মীর নাসির অদৃশ্য কারণে গোলাপগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ রায়, ঘটনার সময়কার ওসি মাসুদুল আমীন ও থানা পুলিশ-বিজিবিকে মামলা থেকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে মামলার মূল এজাহার পরিবর্তন করে মামলা রেকর্ড করেন। এদিকে আদালতে মামলার পর থেকে গোলাপগঞ্জ পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মী আমাকে আদালতে দাখিলকৃত মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিলেটের ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন কয়ছর আহমদ। সংবাদ সম্মেলনে কয়ছর আহমদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন সানির মামা আলি আব্বাস। উপস্থিত ছিলেন শহীদ সানির মা রুবিয়া বেগম ও চাচা রাজু আহমদ।