ব্রিটেনে প্রতারকদের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন স্টুডেন্ট ভিসায় পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮:৩২ অপরাহ্ণ
যুক্তরাজ্যে একটি প্রতারক চক্র বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের ভিসার জন্য ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে লাখ লাখ পাউন্ড হাতিয়ে নিয়েছে। বিবিসির একটি অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নিয়োগ এজেন্ট হিসেবে কাজ করা দালালরা এমনটা করেছেন। যুক্তরাজ্যের সেবাযত্ন খাতে (কেয়ার ইন্ডাস্ট্রি) চাকরি করতে আগ্রহী বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের নিশানা করেন তাঁরা।
যুক্তরাজ্যে কাজের (ওয়ার্ক পারমিট) ভিসার আবেদন করতে স্পনসরশিপ সনদ জমা দিতে হয়। নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান এ সনদ দেয়। এতে চাকরিপ্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য, পদবি, বেতনসহ চাকরির অন্যান্য তথ্য থাকে। স্পনসরশিপ সনদ পেতে চাকরিপ্রার্থীকে কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না। অথচ ভুক্তভোগী প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এ সনদের জন্য ১৭ হাজার পাউন্ড (২৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা) পর্যন্ত আদায় করেছে প্রতারক চক্র। পরে শিক্ষার্থীরা দক্ষ কর্মীর ভিসার জন্য আবেদন করতে গিয়ে বুঝতে পারেন যে এসব কাগজ ভুয়া। বৈধতা না থাকায় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে তাঁদের কাগজপত্র বাতিল করে দেয়।
এমন প্রতারণার বেশ কিছু নথি বিবিসির হাতে এসেছে। এমনই এক নথিতে দেখা গেছে, তৈমুর রাজা নামের এক ব্যক্তি ১২ লাখ পাউন্ডের (১৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা) বিনিময়ে ১৪১টি ভিসাসংক্রান্ত কাগজ বিক্রি করেছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ভুয়া। তবে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি অন্যায় কিছু করেননি এবং শিক্ষার্থীদের কিছু অর্থ ফেরত দিয়েছেন।
তৈমুর রাজা যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস অঞ্চলে একটি অফিস ভাড়া নিয়ে সেখানে কয়েকজন কর্মী নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। তিনি কেয়ারহোমে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া ও চাকরির স্পনসরশিপ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে। তাঁদের অনেকেই প্রতারিত হয়ে জীবনের সব সঞ্চয় হারিয়েছেন। তবে অর্থ প্রদান করা কেউ কেউ সত্যিকার অর্থে ভিসা ও চাকরি পেয়েছেন বলে বিবিসিকে বলা হয়েছে।
কাজের ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে হাজার হাজার পাউন্ড খুইয়েছেন, এমন ১৭ নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। তাঁদের মধ্যে তিন নারী শিক্ষার্থী ভিন্ন ভিন্ন দালালকে মোট ৩৮ হাজার পাউন্ড দিয়েছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বয়স ২০-এর ঘরে। যুক্তরাজ্যে তাঁদের জন্য সৌভাগ্য এনে দেওয়ার আশ্বাস দেন দালালরা। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। প্রতারিত হয়ে কানাকড়ি সব হারিয়েছেন তাঁরা। এখন নিজ দেশে পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়া নিয়েই আছেন শঙ্কায়।