স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগার দখল করে যুবলীগের অফিস!
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুন ২০২৪, ১১:৪০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
বগুড়ার সোনাতলার সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশনে লোকবল না থাকার সুযোগে আরিফুর রহমান পলাশ নামে যুবলীগ নেতা যাত্রী বিশ্রামাগার দখল করে দলীয় ও ব্যক্তিগত অফিস করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই সব অফিস ঘিরে সবসময় বখাটেদের আড্ডা, মাদক কেনাবেচা ও জুয়ার আসর বসায় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের নাজির উদ্দিনের ছেলে ও দিগদাইড় ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক আরিফুর রহমান পলাশ জানান, তিনি স্টেশন, টয়লেট পরিষ্কার ও দেখাশোনা করে থাকেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতেই সেখানে যুবলীগ ও ব্যক্তিগত অফিস করেছেন। এখানে কোনো মাদক ব্যবসা বা জুয়ার আসর বসে না।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৭৯ সালে বগুড়া সদর থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার উত্তরে সাবেক প্রাদেশিক পরিষদের এমএলএ মরহুম সৈয়দ আহম্মদের নামে স্টেশনটি চালু হয়। গত ২০২২ সালে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে স্টেশনের আধুনিকায়ন করা হয়। ওই ভবনে স্টেশন মাস্টারের কক্ষ ছাড়াও যাত্রীদের জন্য দুটি আধুনিক বিশ্রামাগার রয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগে দিগদাইড় ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক আরিফুর রহমান পলাশ একটি যাত্রী বিশ্রামাগার দখল করে সেখানে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন। স্টেশনে সার্বক্ষণিক বহিরাগতদের আড্ডা, মাদক কেনাবেচা ও জুয়ার আসর বসে। এতে স্টেশনে আসা যাত্রীরা আতঙ্কে থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী বলেন, যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান পলাশ প্রচণ্ড প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস করেন না। সচেতন এলাকাবাসী সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগার দখলমুক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দিগদাইড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্টেশনের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল হক টুল্লু অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান পলাশ বেশ কিছুদিন আগে সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশনের বিশ্রামাগার দখল করে দলীয় কার্যালয় করেছেন। পুরো স্টেশনের চাবি তার কাছে রয়েছে। স্টেশনে বহিরাগত তরুণ-কিশোররা সার্বক্ষণিক আড্ডা দেয়। ক্যারাম খেলার নামে সেখানে মাদক কেনাবেচা ও জুয়া চলে। এতে যাত্রীরা আতঙ্কিত থাকেন।
সৈয়দ আহম্মদ কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইদুজ্জামান জানান, তার প্রতিষ্ঠানে বছরে ৭-৮টি ফরম পূরণ হয়ে থাকে। যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান পলাশ গাবতলী মডেল কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক হলেও তিনি ছাত্রছাত্রীদের কাছে বেশি টাকা নিয়ে তার কলেজে জোরপূর্বক কম টাকায় ফরম পূরণ করিয়ে থাকেন। সম্প্রতি এতে রাজি না হওয়ায় পলাশ কলেজে এসে হুমকি দেয়। এ ব্যাপারে গাবতলী থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগার দখল করে দলীয় কার্যালয় করার ব্যাপারে বগুড়া স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু ও সুখানপুকুর স্টেশন মাস্টার আবদুল মতিন কিছু বলতে পারেননি।
সোনাতলা থানার ওসি বাবু কুমার সাহা জানান, যুবলীগ নেতা পলাশের বিরুদ্ধে ২-৩টি মামলা রয়েছে। স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগার দখল করে দলীয় কার্যালয় বানানোর বিষয়টি তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সুত্র-যুগান্তর