সিলেটের উত্তর পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মে ২০২৪, ৬:২৪ অপরাহ্ণ
সুরমানিউজ ডেস্ক::
অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাড়াড়ি ঢলে সিলেটের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলারউত্তর পূর্বাঞ্চলে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অনেক মানুষ পানিরবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। সিলেট জেলার কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দেখা দিয়ে এই বন্যা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, জেলার কানাইঘাট উপজেলায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১.৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোয়াইনঘাটের সারিঘাটে সারি ও গোয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমার ৩.৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট-সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক। গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের হাওর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের শিমুলতলা পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার হাওরাঞ্চলের বাড়িঘরের মানুষ এখন পানিবন্দী। এছাড়া উপজেলার রুস্তমপুর, লেংগুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাও, পশ্চিম জাফলং ও মধ্য জাফলংয়ে প্লাবনের পরিমাণ বেশি হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে মোট ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবন-প্রবণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে জনগণকে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।
সিলেটের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষজন জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকার ফসলি ধানের জমি জলমগ্ন হয়েছে। উপজেলার নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে নয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ী, ফুলবাড়ী, ডিবিরহাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, চাতলারপাড়, ডুলটিরপাড়, ১ নম্বর লক্ষ্মীপুর, ২ নম্বর লক্ষ্মীপুর, আমবাড়ী, ঝিঙ্গাবাড়ী, কাঁঠালবাড়ী, নলজুরী হাওরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে কয়েক হাজার হেক্টরের বোরো ধান।উপজেলা বৃহৎ নদী সারী ও বড় নয়াগাং নদী এবং রাংপানি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কানাইঘাটের লোভার নদীর অববাহিকা কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার সুরমার উত্তর এলাকার নিম্নাঞ্চল ও লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ও ইসলামপুর প্রভৃতি কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ভারতের মেঘালয়া রাজ্যের পাহাড়ি ঢলে প্লাবনের সৃষ্টি হয়েছে। বানের পানি ক্রমশ সিলেট সদরের উত্তরাঞ্চলীয় কয়েকটি ইউনিয়নে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেক বৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দিন ধরে হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বোরো ধানের ফসল অনেকটা কাটা হয়ে গেছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আমন ও সাইলের চারার ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে।