সিলেটে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ৪ বছরে তিনবার অগ্নিকাণ্ড
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:০৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ফের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। গতকাল সোমবার সকালে উপকেন্দ্রের ভেতর পরিত্যক্ত এয়ার ফিল্টারের স্তূপে আগুন লাগার পর দুটি ফিডারের আওতাধীন সরবরাহ লাইন বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। গত চার বছরে এ নিয়ে তিনবার অগ্নিকাণ্ড ঘটল। গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনায় একের পর এক দুর্ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে এই উপকেন্দ্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। ওই সময় সিলেট নগরীসহ আশপাশের এলাকায় টানা ৩১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল অগ্নিকাণ্ডে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির সমকলকে জানিয়েছেন, সকাল ৯টার দিকে উপকেন্দ্রের ভেতরের ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৩ কেভি লাইনের নিচে বিদ্যুতের হাইভোল্টেজের তার ছিঁড়ে স্পার্কিং হয়। ওই সময় নিচে ডাম্পিং করে রাখা পরিত্যক্ত এয়ার ফিল্টারে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট এসে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরও বলেন, এটি পুরাতন বিদ্যুৎকেন্দ্র হওয়ায় অনেক যন্ত্রপাতি পুরোনো হয়ে গেছে। নতুন গ্রিড সাবস্টেশন হচ্ছে। কাজ শেষ হলে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, এয়ার ফিল্টারগুলো সেখানে রাখা ঠিক হয়নি। সেগুলো দাহ্য হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল।
কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের উপসহকারী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের পর দুটি ফিডারের আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তবে অন্য ফিডার থেকে কিছু এলাকায় ওই সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত করার পর সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।
এদিকে, এই উপকেন্দ্রের পাশে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা জরুরি বলে মনে করেন সিলেটের সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি গতকাল কেন্দ্র পরিদর্শনকালে এ কথা জানান।
২০২০ সালে পুড়েছে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি
পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমারগাঁওয়ে জাতীয় গ্রিড লাইনের দুটি ট্রান্সমিটারে আগুন লেগে গিয়েছিল। ট্রান্সমিটারের জ্বালানি তেল থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে গ্রিড লাইন, ট্রান্সমিটারসহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য দগ্ধ হন। অগ্নিকাণ্ড নিয়ে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি। কোম্পানির তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক মো. মাসুম আলম বকসীর নেতৃত্বাধীন কমিটি পরের বছর ১১ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু দুর্ঘটনার জন্য প্রতিবেদনে কাউকে দায়ী করা হয়নি। তবে এতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৬৭ সালে স্থাপিত উপকেন্দ্রটির প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন না করা এবং কর্তৃপক্ষের সঠিক পরিকল্পনা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সুত্র-সমকাল