এখন ডিমও পাতে উঠছে না তাদের
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:০৪:০৯,অপরাহ্ন ২৬ আগস্ট ২০২৩
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা মানুষ। বিপাকে কর্মহীন ও অল্প আয়ের পরিবারগুলো। বাজারে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে চলছে মাছ, মাংসসহ আলু, পিয়াজের দাম। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডিমের দামও। আগে যেসব মানুষ মাছ, মাংস দিয়ে খাবার খেতেন, এখন তাদের কারো কারো পাতে উঠছে না ডিমও। মেসের খাবারে ডিম ভাগ করে খাওয়ার তথ্যও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
একটি স্কুলের শিক্ষক সুলতান। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। বলেন, আগে প্রতিদিনই মাছ মাংসসহ একাধিক আইটেমের খাবার হতো। এখন মাছ মাংসের গন্ধ নেয়ারও সাহস করতে পারছি না। ডিমের ওপর ভরসা করেই কয়েক মাস চললেও এখন সেটাও কিনতে পারি না।
ডিমের বাজারেও আগুন। বাজারে যেভাবে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে তাতে আগামী দিনগুলোতে ডিম কেনাও সম্ভব হবে না। শিক্ষকতা করে আমি যদি ডিম কিনতে সাহস না পাই, তাহলে দেশের গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো কীভাবে দিনযাপন করে অনুভব করতে পারছি।
রাজু আহমেদ। ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, ওষুধ কোম্পানিতে সেলসম্যানের কাজ করে পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকি। আমাদের ৪ জনের সংসার। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাসা ভাড়া দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। এরপর নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে সংসার চালাতে আরও বেশি হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক পর্যায়ে এসে আমরা মাছ ও মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেই। এর পরিবর্তে ডিম খাওয়া শুধু করি। মাংস ও মাছ না থাকলেও ডিম দেখেই ছেলে-মেয়েরা খুশি হতো। কিন্তু এখন ডিমের দামও বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ হলো আমরা ডিম খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছি।
বৃহস্পতিবার কাওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আড়তদার এক ডজন ডিম বিক্রি করছেন ১৫০ টাকায় এবং এক হালি বিক্রি করছেন ৫০ টাকায়। আর মুদি দোকানদাররা এক ডজন বিক্রি করছেন ১৫৫ টাকায় অন্যদিকে এক হালি বিক্রি করছেন ৫৫ টাকায়। এখানে মুদি দোকানদাররা ডজন ও হালিতে ৫ টাকা করে লাভ করছেন। ডিমের দামের বিষয়ে কথা হয় কাওরান বাজারের আড়তদার সঞ্জয়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা এক ডজন ডিম বিক্রি করি ১৫০ টাকায়। আর এক হালি ডিম বিক্রি করি ৫০ টাকায়। গত এক মাস ধরেই এই দামেই ডিম বিক্রি করছি। আর এরমধ্যে ডিমের দাম কমবে কি না, বলতে পারবো না।
মুদি দোকানদার মো. রুবেল বলেন, আমরা এক ডজন ডিম বিক্রি করি ১৫৫ টাকায় এবং এক হালি বিক্রি করি ৫৫ টাকায়। ডজন ও হালিতে আমাদের ৫ টাকা করে লাভ হয়। তবে ডিমের এই দাম নির্ধারণে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তারা যে দাম ঠিক করে দেয়। সেই দরেই আমরা বিক্রি করি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ডিমের দাম ৩ টাকা বেড়েছিল। আমরা ২ টাকা কমিয়েছি। আর আমরা একটা সহনীয় পর্যায়ে আনার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এটা (ডিমের দাম কমানো) আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না।