জগন্নাথপুরে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, চালকসহ দুজনের লাশ উদ্ধার
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২৩, ১১:২৮ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সুনামগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে বেইলি সেতু ভেঙে নদী পড়ে যায় একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দুই ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে চালক ও সহকারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে ট্রাকটি উদ্ধার হয়নি।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ইছাগাঁও এলাকার নলজুর নদের কাটাগাঙ্গের ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ গ্রামের ট্রাকচালক ফারুক মিয়া (৪২) ও তার সহকারী সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ধুপাতল এলাকার বাসিন্দা জাকির আহমদ কলিন্স (৩৫)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ঢাকা থেকে আসা ৫০০ বস্তা সিমেন্টভর্তি একটি বড় ট্রাক বেইলি সেতু পার হওয়ার সময় উত্তর পাড়ের অ্যাপ্রোচে অতিরিক্ত স্টিল দিয়ে তৈরি করা বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাকটি নলজুর নদীতে ডুবে যায়। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে।
পরে সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মো. তারেক হাসান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ডুবুরি নবীর উদ্দিন ও জুম্মন আহমদ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। দুই ঘণ্টা পর পানির প্রায় ৫০ ফুট নিচে থাকা ট্রাক থেকে ওই চালক ও তাঁর সহযোগীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ওই সড়ক দিয়ে সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সরাসরি যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়ান বিন ইব্রাহিম ভূঞা বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সেতুটি মেরামতের কাজ করে চালু করা হবে।’
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ-পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি-ঢাকা আঞ্চলিক এ মহাসড়কে জগন্নাথপুর উপজেলার ইছাগাঁও নামক স্থানে বহমান নলজুর নদীর (কাটাগাঙ্গ) ওপর ২০১২ সালে বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১৭ সালের ১৩ জুন সেতুটির দক্ষিণ অংশের অ্যাপ্রোচের মাটি ধসে গর্তের সৃষ্টি হয়। একই বছরে ১৩ জুলাই আবার মাটি ধসে একই স্থানে দ্বিতীয়বার গর্তের সৃষ্টি হলে অ্যাপ্রোচে অতিরিক্ত স্টিল দিয়ে মেরামত কাজ করা হয়। পরে আবার ২০২২ সালে ১৫ জুলাই সেতুটির উত্তর অংশের অ্যাপ্রোচের মাটি ধসে গর্তের সৃষ্টি হলে অ্যাপ্রোচে অতিরিক্ত স্টিল দিয়ে মেরামত কাজ করা হয়।
এ ছাড়া কয়েক দিন পরপর সেতুটির পাটাতন খুলে গেলে মেরামত করা হয়। পরে আবার ১১ মার্চ রাতে সেতুটির একটি পাটাতন খুলে নদীতে পড়ে গেলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন নতুন পাটাতন লাগানো হলে যানচলাচল শুরু হয়। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই আবার পাটাতন খুলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।