সিলেটে চার বছর পর পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে যুবলীগের কমিটি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০২৩, ৬:৩৭ অপরাহ্ণ
ওয়েছ খছরুঃ
সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল ৪ বছর আগে। ২০১৯ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছিল দুটি ইউনিটের ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি। বলা হয়েছিল, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু ৪ বছর পেরিয়ে গেল এখনো ঘোষণা করা হয়নি কমিটি। এতে দেখা গেছে কেউ এক যুগ, কেউ দেড় যুগ ধরে অপেক্ষায় থাকলেও দলীয় পরিচয় দিতে পারছে না। যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানান, ২০১৪ সালের জুলাইয়ে আলম খান মুক্তিকে আহ্বায়ক করে সিলেট মহানগর যুবলীগের ৬১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির মেয়াদ ছিল ৩ মাস। তবে সেই কমিটি প্রায় ৬ বছর দায়িত্ব পালন করে। এরপর সম্মেলনের মাধ্যমে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
একইভাবে সিলেট জেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছিল ২০০৩ সালে। ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত কার্যক্রম চালায় যুবলীগের সেই কমিটি।
ওয়ান ইলেভেনের সময় ওই কমিটির হাল ধরেছিলেন বর্তমান সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি। এখন তার হাত ধরেই দীর্ঘ ২০ বছর পর পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে জেলা কমিটি। তবে জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতারা জানিয়েছেন, আর হয়তো বেশি সময় লাগবে না। কমিটি চূড়ান্ত। আগস্টেই হতে পারে দুটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা। ইতিমধ্যে কয়েক দফা যাচাই-বাছাইয়ের পর দুটি কমিটি চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। নেতারা জানান, সিলেট যুবলীগে মধ্যে স্বচ্ছতা ও গতি ফিরিয়ে আনতে এবার সময় নিয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। যারা পরিচ্ছন্ন থেকে রাজপথে ভূমিকা রাখতে পারছেন তারাই আসছেন নেতৃৃত্বে। তবে এবার যারা কমিটিতে আসছেন তারা প্রায় সবাই নতুন মুখ।
আগের কমিটির অনেকেই মূল দল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। এ কারণে নিকট অতীতে রাজপথ কাঁপানো ছাত্রলীগ নেতারাও পাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ পদ। এদিকে ২০১৯ সালের ২৯শে জুলাই সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সিলেট জেলা যুবলীগের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যুবলীগের মধ্যে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। এতে জেলার সভাপতি হন শামীম আহমদ ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক হন শামীম আহমদ। মহানগরের সভাপতি হয়েছিলেন সাবেক আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক হন মুশফিক জায়গীরদার। দুটি ইউনিটের ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি দিয়ে সিলেটে বিতর্কহীনভাবে পরিচালিত হয়েছে যুবলীগ। দলীয় কর্মসূচি পালনে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি বেড়েছে। সর্বশেষ গত ৯ই জুলাই সিলেটে বিভাগীয় শান্তি সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল বেশি। এতে কয়েক হাজার কর্মী সক্রিয়ভাবে অংশ নেন বলে জানিয়েছেন নেতারা। তারা বলেন, জেলা যুবলীগে ২০ বছর ধরে চলছে অপেক্ষা। কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণে নেতাদের মধ্যে হতাশা ঘিরে ধরেছে। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিলেট যুবলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।
পদ না থাকার পর জেলা ও মহানগরের নেতারা নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকার জয় নিশ্চিত করেন। নির্বাচনের আগে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। বৈঠকেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ব্যাপারে দাবি উত্থাপন করেন নেতারা। নির্বাচনের পর বিষয়টি দেখবেন বলে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হওয়ায় কর্মীরা আরও বেশি হতাশ হয়ে পড়েছেন। তবে সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি ও ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ ভিপি গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সিলেটে যুবলীগ পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে চায়।
এ কারণে অতীতে কোনো দুর্নাম সঙ্গী হয়নি। ইতিমধ্যে যাচাই-বাছাই করে কমিটি জমা দেয়া হয়েছে। আশা করছি; আর বেশি সময় লাগবে না। সময়মতো কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে। ভবিষ্যতে কমিটি বিতর্কমুক্ত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানান তিনি। সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি জানিয়েছেন, আমরা এক বছর আগেই কমিটি জমা দিয়েছি। এরপর কেন্দ্র করে সময় নিয়ে কমিটি যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এবার চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন ও রাজপথের নেতারা কমিটিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে বলে জানান তিনি।