কেমন হবে বিএনপি’র মহাসমাবেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুলাই ২০২৩, ৮:২৭ অপরাহ্ণ
একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকায় আগামী বৃহস্পতিবার মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। এদিন বিএনপি’র সমমনা দলগুলোও সমাবেশ কর্মসূচি দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর বড় এই কর্মসূচি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতুহল। কেমন হবে এই সমাবেশ। পরবর্তী কী কর্মসূচি আসছে এই সমাবেশ থেকে এই আগ্রহ রাজনীতির ময়দানে। বৃহস্পতিবারের সমাবেশকে বৃহৎ পরিসর দিতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সমাবেশ সফল করতে গতকাল দলটির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বৈঠক সূত্র জানায়, মহাসমাবেশ সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
এ ছাড়া এই মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা হবে জানিয়ে পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়েও নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেয়া নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপি’র কর্মসূচিতে এখন অনেক সাধারণ মানুষও অংশ নিচ্ছেন।
মহাসমাবেশে এই উপস্থিতি আরও ব্যাপক হবে বলে তারা আশা করছেন। এজন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এজন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয়েছে। সমাবেশের দিনে কোথাও বাধা-বিঘ্নের ঘটনা ঘটলে নেতাকর্মীদের কী করণীয় হবে তাও বলে দেয়া হয়েছে বৈঠকে।
পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অথবা সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশকে অবহিত করেছে বিএনপি। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, আজকের মধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে তারা আশা করছেন।
পাশাপাশি এদিন সমমনা দলগুলোও আলাদা সমাবেশ করবে। তারা পৃথক স্থানে সমাবেশ করবে। আজ-কালের মধ্যে এসব দল তাদের সমাবেশের স্থান জানিয়ে দেবে। এসব দলগুলোর সমাবেশেও ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, অতীতে ঢাকায় সমাবেশে আসতে পথে নেতাকর্মীদের বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছিল। আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নানাভাবে সমাবেশে আসা লোকজনকে ঠেকাতে চেষ্টা করে। এবার সেসব অভিজ্ঞতার আলোকে দলীয় কৌশল নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রের দাবি, ২৭শে জুলাই ঢাকার মহাসমাবেশে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতাকর্মীদের নতুন করে শপথ পড়ানো হবে। পাশাপাশি পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইমলাম আলমগীর গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা অত্যন্ত সংযত অবস্থায়, শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। ক্ষমতাসীনদের ভয়াবহ সংঘাতমূলক পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের কোনো কর্মসূচিতে বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে আটকাতে পারেনি। মানুষ নৌকায় পার হয়ে, ভেলায় পার হয়ে, পায়ে হেঁটে এসেছে। এবারো মানুষের আগ্রহ এত বেশি পরিবর্তনের জন্য তারা যেভাবে হোক ঢাকার মহাসমাবেশে উপস্থিত হবেন। মহাসমাবেশ থেকে আমাদের একটাই বার্তা দেয়া হবে। তাহলো এই সরকারের পদত্যাগ। এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে নেই, তারাও পরিষ্কারভাবে বলছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।
এই দেশে এখন কোনো রাজনৈতিক দল অবশিষ্ট নেই, যারা মনে করে, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মানবজমিনকে বলেন, এবারের মহাসমাবেশে আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি নেতাকর্মী অংশ নেবেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাদের কর্মসূচিতে আসবেন। তারা তাদের অধিকারের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করবেন। মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। নয়াপল্টন কিংবা সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান যেখানেই সমাবেশ হবে সেখানে জনস্রোত সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। মহাসমাবেশও শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। তবে এখানে কেউ যদি ইচ্ছা করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়, আমাদের ওপর হামলা চালায় তাহলে আমাদের নেতাকর্মীরা বসে থাকবে না। সবাই মিলে প্রতিহত করা হবে। আমরা অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। এবার আর সহ্য করা হবে না।