সিলেটে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুলাই ২০২৩, ১০:৫০ অপরাহ্ণ
সিলেটে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে নগরের চেয়ে গ্রামেই বেশি মিলছে রোগী। এ নিয়ে নগরেও আতঙ্ক বাড়ছে। তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নগরে গত কয়েক দিন ধরে লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। এতে আশঙ্কা করা হচ্ছে নগরেও ডেঙ্গু রোগী বাড়বে। এ কারণে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, সিলেটে একশ’ ছাড়িয়ে গেছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। গত ১০ দিন আগেও এ সংখ্যা ছিল খুবই কম। কিন্তু এখন প্রতিদিনই রোগী বাড়ছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ ওয়ার্ডকে ডেঙ্গু রোগীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সিলেটে এবার প্রথম ডেঙ্গু রোগী মিলেছিল জাফলং ও জৈন্তাপুরে। বেড়াতে আসা পর্যটক এবং তাদের ফেলে যাওয়া প্লাস্টিকের সামগ্রীতে পানি জমে লার্ভা জমে এবং পরে মশায় আক্রান্ত হন ওই এলাকার লোকজন। এ ছাড়া বৃষ্টির পানি জমিয়ে রাখা পাত্রেও ডেঙ্গুর অস্তিত্ব মিলে।
এ কারণে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ওই এলাকাগুলোতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়। সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ার মানবজমিনকে জানিয়েছেন, এখনো সিলেটে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়নি। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। লার্ভা সার্চিংয়ের পাশাপাশি চলছে চিকিৎসাও। রোগী বাড়লেও আমাদের প্রস্তুতি আছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩টি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গু রোগীর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন বিল্ডিংয়ে রয়েছে দুটি ওয়ার্ড। এ দুটি ওয়ার্ডে গতকাল ১৩ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তবে আশার কথা কোনো শিশু ভর্তি নেই। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন, আমাদের ওখানে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এসে ভর্তি হচ্ছেন কেউ সিরিয়াস নয়। চিকিৎসা নিয়ে সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আমাদের পরিস্থিতি খুব খারাপ সেটি বলা যাবে না। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মানুষকে সচেতন হতে হবে। তবেই আমরা ডেঙ্গুর সঙ্গে লড়াই করতে পারবো। তিনি জানান, শহরের চেয়ে গ্রামের রোগী সংখ্যা বেশি। হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ থেকেও রোগী আসছে।
সুতরাং ওইসব এলাকায়ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানান তিনি। এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় এখনো ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়েনি। এখন পর্যন্ত দু’জন রোগী পাওয়া গেছে। গত এক সপ্তাহে লার্ভা বেশি মিলছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, নগরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি নয়। তবে আমরা আতঙ্কে আছি। প্রতিদিনই লার্ভা মিলছে। জুন মাসের প্রথম দিকে শুরু হওয়া সার্চিং কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত ৪০টি স্থানে লার্ভা মিলেছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১৪ জনের টিম প্রতিদিনই সার্চিং করছে। গতকাল নগরের পাঠানটুলা এলাকায় সার্চিং করা হয়। সেখানে প্রায় বাসার ড্রেনে লার্ভা পাওয়া যায়। এটা নগরের জন্য এলার্মিং। তিনি জানান, সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। নগরের মানুষকে তাদের আশপাশ পরিষ্কার করে রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মাইকিং করা হবে বলেও জানান তিনি।