পানিবন্ধী মানুষের পাশে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০২৩, ১১:১৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সকাল থেকে অঝর ধারায় ঝরছিল বৃষ্টি। অনেকটা আকশা ফুটো করে ঝরার মতই ব্যাপার। প্রায় ৪ ঘন্টার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন নগরবাসী। চরম দুর্ভোগে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তারা। এমন দুর্যোগে দুর্ভোগ কবলিত মানুষের পাশে ছুটে গিয়েছিলেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তাদের আশ্বস্ত করেছেন, সুদিন আসছে। এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে অবশ্যই।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে আওযামী লীগ মনোনীত মেয়র পদর্প্রার্থী। প্রায়ই নির্বাচনী সভা বা গণসংযোগে নিজেকে দুঃসময়ে বন্ধু হিসাবে জনগন তাকে কাছে পাবেন বলে আশ্বাস দিয়ে থাকেন। আশ্বাস দেন পরিকল্পিত উন্নয়নে নগরবাসীরবাসীর কষ্ঠ লাঘবের, দুর্ভোগ অবসানের। বুধবারের দুর্যোগ আর দুর্ভোগে সিলেটবাসী তাকে কাছে পেয়েছেন। বলেছেন বা দেখিয়েছেন নিজেদের দুর্দশার চিত্র। আনোয়ারুজ্জামানও সবকিছু দেখলেন, জানলেন, বুঝলেন এবং এ অবস্থার অবসানের ব্যাপারে আবারও আশ্বাস দিলেন।
তিনি দুপুরের দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। ঘুরতে ঘুরতে উপস্থিত হন নগরীর শিবগঞ্জ সোনারপাড়া, ফরহাদখাঁর পুল, তালতলা, কাজিরবাজার, তোপখানা ইত্যাদি জলাবদ্ধ এলাকায়। খুব কাছ থেকে দেখেন উন্নয়নের নামে সৃষ্ট দুর্ভোগের দৃশ্য। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সিলেটবাসীকে এমন দুর্ভোগ উপহার দেয়া হয়েছে কেবলমাত্র সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শি নেতৃত্বের অভাবে।
তাকে কাছে পেয়ে এসব এলাকার মানুষ তাদের কষ্টের কাহিনী শোনালেন। জানালেন, কিভাবে তারা দিনের পর দিন রাতের পর রাত এমন আমানবিক অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ জীবন যাপন করছেন। তাদের প্রশ্ন, আমরা ট্যাক্স দিয়ে দুর্ভোগ কিনবো কেন? সহজ সরল সুন্দর জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের ভোট নেয়ার বিনিময়ে এই হচ্ছে প্রাপ্তি।
জবাবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাদের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে জনগনের টাকার সদ্ব্যাবহার না করে উন্নয়নের নামে যাচ্ছে তাই কাণ্ড করা হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবতে হচ্ছে। ঘরবাড়িতে পানি উঠছে। এতে চরম দুর্ভোগে মানুষের জীবন কঠিন থেকে আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থার অবসান খুব জরুরী।
তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হতে পারলে অবশ্যই পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ লাঘবে কাজ করবো। মানুষ যাতে পানিবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পান, সেজন্য নগরীর ছড়া খাল উদ্ধার ও খনন করা হবে। সুরমার ৮ থেকে ১০ বা ১৫ কিলোমিটার ড্রেজিং করলে নাব্যতা বৃদ্ধি পাবে এবং নগরীর পানি দ্রুত নদীতে নেমে যাবে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হবে। এককথায়, একটি আধুনিক স্মার্ট এবং বাসযোগ্য নগরী গড়ে তুলতে যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই করা হবে।
এরপর দুপুর ২টার দিকে সিসিক’র ৩৮ ও ৩৯নং ওয়ার্ডের মইয়ারচর, নয়াকুরুমকলা, নাজিরেরগাঁও ও শিমুতলার জলাবদ্ধ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
তখন ওই এলাকার দুর্ভোগকবলিত লোকজন বিক্ষুব্ধ অবস্থায় বাদাঘাট-কুমারগাঁও সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। কারণ, সিলেট সড়ক ও জনপথের লোকাজন পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না করেই রাস্তার কাজ শুরু করেছিলেন। একারণে বুধবার সকালের বৃষ্টিতে এই ৪টি গ্রামের মানুষসহ আশাপাশের লোকজন জলবন্দী হয়ে পড়েছিলেন। তাদের ঘরবাড়িতে পানি উঠে যায়। তারা নানা আক্রমনাত্মক শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
হঠাৎ আনোয়ারুজ্জামানকে কাছে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন। নিজেদের দুঃখের কথা বলতে থাকেন আনোয়ারুজ্জামানে কাছে। এসময় রাস্তার দুদিকে কয়েকশ’ গাড়ি আটকা পড়েছিল। চালক যাত্রীসহ সহস্রাধিক মানুষ তখন চরম দুর্ভোগে।
আনোয়ারুজ্জামান তাদের বক্তব্য শুনেন এবং সওজ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে দুপুর আড়াইটার দিকে স্থানীয়রা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। আনোয়ারুজ্জামানের চেষ্টায় মুক্ত হয় বাদাঘাট কুমারগাঁও নাম গুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক মহাসড়ক।
এখানেও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সবার উদ্দেশ্যে বলেন, অপরিকল্পিত প্রকল্পের কারণে আজ এই দুর্ভোগ। এটা কেবল আপনাদের দুর্ভোগই নয়, আপনাদের সন্তান হিসাবে আমারও দুর্ভোগ। এর অবসান জরুরী। সিলেট সিটি করপোরেশনের নাগরিকদের এমন মানবসৃষ্ট দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন।
তিনি সবার দোয় ও আশীর্বাদ চেয়েছেন।