সিলেটে ‘মেন্টালি প্রেসারে’ জাপা প্রার্থী বাবুল
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০২৩, ১২:১৬ অপরাহ্ণ
সিলেটের ভোটের মাঠে অপপ্রচারের কারণে মেন্টালি প্রেসারে রয়েছেন জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল। এমনটি তিনি নিজেই জানিয়েছেন। এই প্রেসার পারিবারিকভাবে তাকে বিপর্যস্ত করে তোলা হচ্ছে বলে দাবি তার। সিলেট সিটি নির্বাচনের ভোটের মাঠে ইতিমধ্যে নানা ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। বরিশালের ঘটনায় সোমবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বয়কট করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান।
ওইদিন সকাল থেকে ভার্চ্যুয়াল মিডিয়ায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলের একটি ভিডিও নিয়ে সরব ছিলেন ভোটাররা। ভিডিও প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। তবে বিকালে ভিডিও’র পাল্টা জবাব দিয়েছেন বাবুলের বড় স্ত্রী বেদানা বেগম। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বার্তায় বিভ্রান্ত না হতে নগরবাসীকে আহ্বান জানান।
এমন ঘটনায় তার পরিবার বিপর্যস্ত হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। সিলেটে এখনো আলোচনা হচ্ছে বাবুলের সেই ভিডিও নিয়ে। ভোটারদের মধ্যে হয়েছে প্রতিক্রিয়া।
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে বিব্রত বাবুল। গতকাল প্রচারণায় নেমে তিনি এ ব্যাপারে ক্ষোভ ঝাড়লেন। নগরের করিম উল্লাহ মার্কেটে প্রচারণা শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রেখে বাবুল জানান- ‘হাত পাখার প্রার্থী বয়কটের আগে যেসব কথা বলেছেন সেগুলোই সত্য।
নির্বাচনে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। হাত পাখার প্রার্থী কেন সরে গেলেন, আরিফুল হক চৌধুরী কেন সরে গেলেন? কারণ এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠুু হওয়ার সুযোগ নেই।’ তিনি দাবি করেন- ‘আমাকে অফ করে দেওয়ার জন্য অনেক মেন্টালি প্রেসার দেয়া হচ্ছে। কি কি জিনিস এডিট করে আমাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দিচ্ছে। এগুলো করে কোনো লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেন বাবুল।’ তিনি জানান- ‘আমাকে নিয়ে বহু ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
যদি ষড়যন্ত্র না হতো তাহলে নির্বাচনের ৬ দিন আগে কেন এসব ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। আমরা নোংরা রাজনীতি করি না, পছন্দও করি না। আমরা স্বচ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। বরিশালের নির্বাচন দেখে আমরা হতাশ। কী পরিমাণ মারধর করা হয়েছে প্রার্থীকে। এটা কোনো ইলেকশন নয়। ভদ্রতা ও শালীনতা বলতে কিছুই নেই।’ তিনি দাবি করেন- ‘সিইসি’র বক্তব্য শুনার পরে আমি শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী রাত ১২টা পর্যন্ত প্রোগ্রাম করে যাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়ে সাড়া পাচ্ছি না।
এই অবস্থা যদি হয় তাহলে আমরা হাত-পা গুটিয়ে বাসায় বসে থাকি। মেন্টালি প্রেসার দিয়ে, ধমকিয়ে, গুম-খুনের ভয় দেখানো টিক না।’ জাতীয় পাার্টির নেতারা জানিয়েছেন- প্রার্থী নিজেই গতকাল দুপুরে সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড নেই দাবি করে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগে তিনি নিরপেক্ষ মাঠ প্রস্তুত করার জন্য রিটার্রিং কর্মকর্তাকে আহ্বান জানান।
এদিকে- গতকাল সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং হোটেল নির্ভানা ইনে দু’টি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মেয়র আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হাত পাখার প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন- ‘এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে, সিলেটের নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যেতে হবে। আমরা সব প্রার্থী সমান অধিকার নিয়ে নির্বাচন করছি। বরিশালের ঘটনায় সিলেটে মাঠ থেকে সরে যাওয়াও উচিত না। নির্বাচনে না এলে মেয়র হওয়া যাবে না।
সুতরাং সিলেটের হাত পাখার প্রার্থীকে আমি নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাই।’ সিলেটের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে দাবি করে মেয়র প্রার্থী আনোয়ারজ্জামান জানিয়েছেন- ‘অন্য জায়গার কথা জানি না। তবে- সিলেটের কেন্দ্রে ভোটাররা আসবেন। উৎসমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে সিলেটের মানুষের উৎসাহ- উদ্দীপনা বেশি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে; কেউ নির্বাচনে না এলে তাকে জোর করে তো আর কেন্দ্রে আনা যাবে না। আমি উন্নত দেশে ছিলাম। সেখানে দেখেছি ভোটারের মধ্যে তেমন আগ্রহ থাকে না। তবে সিলেটে পরিবেশ ভিন্ন হতে পারে। মানুষ দলে দলে এসে কেন্দ্রে ভোট দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।