মালিকানা নিয়ে দাবিদার দুই ইউনিয়নের দুই শিক্ষক : গরু নিজেই ‘প্রমাণ’ করল সে কার!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪৩:২৬,অপরাহ্ন ২২ মে ২০২৩
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
এক গরুর মালিকানা নিয়ে দুই ইউনিয়নের দুই শিক্ষক দাবিদার। এ নিয়ে টানা ২০ দিন দফায় দফায় বিচার-সালিশ। উত্তেজনা বাড়তে থাকে আশেপাশের কয়েক গ্রামে। দুই পক্ষের বারবার অটল মালিকানার দাবি নিয়ে বিপাকে পড়েন গ্রাম আদালতের দুই চেয়ারম্যান। বিষয়টি গড়ায় থানা-পুলিশ পর্যন্ত। অবশেষে সেই গরুর নিজের ‘বিচারেই’ মালিকানা প্রমাণ হয়েছে।
এতে নিরসন হয়েছে দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মানুষের উত্তেজনা।
ঘটনার শুরু মে মাসের শুরুর দিকে। খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গড়ইখালী শান্তা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুদর্শন মণ্ডল অভিযোগ তোলেন তার গরু মাঠ থেকে হারিয়ে গেছে। কয়দিন পর গরুটি খুঁজে পাওয়া যায় পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের লস্কর খড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপক মণ্ডলের বাড়িতে। অভিযোগ দেয়া হয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে।
পাশাপাশি দুটি ইউনিয়ন গড়ইখালী ও লস্কর। গত ৬ মে গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম কেরু ও লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন একত্রে বসেন গরুর মালিকানা দ্বন্দ্ব নিরসনে। তবে দু পক্ষই তাদের দাবিতে অটল থাকায় ওই দিনের শালিসের কোনো ফল মেলে না। এর পরও দফায় দফায় বসাবসি নিয়ে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে দুই ইউনিয়ন জুড়ে। বিচারের সহায়তায় এগিয়ে আসেন থানা পুলিশের সদস্যরা।
গত বৃহস্পতিবার আবারও বসে আরেক দফা শালিশি বৈঠক। দুই শিক্ষক, দুই চেয়রম্যান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও থানা পুলিশ এক সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, শুক্রবার সকাল দুই শিক্ষকের বাড়ির মধ্যবর্তী কুমখালী বিলের বটতলা নামক স্থানে গরুটি ছেড়ে দেয়া হবে। রাত ৮টার মধ্যে যে শিক্ষকের বাড়িতে গরু যাবে, সেই তার প্রকৃত মালিক।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সালিশি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকালে গরুটি ছেড়ে দেয়া হয়। দিনভর থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়। নির্ধারিত সময়ের ঠিক ১ ঘণ্টা আগে সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে গরুটি বিল থেকে সরাসরি শিক্ষক সুদর্শনের গোয়ালে গিয়ে অবস্থান নেয়। এতে প্রমাণ হয় শিক্ষক সুদর্শন গরুটির প্রকৃত মালিক।’
তিনি বলেন, ‘এখন বলা যাচ্ছে গরু নিজেই তার বিচার করেছে, তার প্রকৃত মালিকের কাছেই গেছে। গরুর বিচারের ফলে দুই ইউনিয়নের মানুষের উত্তেজনা কমেছে।’