দলের কমিটি দেওয়ার সময় লন্ডনমুখী না হওয়ার নির্দেশ খালেদা জিয়ার
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২০:৩৬,অপরাহ্ন ২৪ এপ্রিল ২০২৩
প্রায় এক বছর পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বৈঠকে দলের বিভিন্ন কমিটি নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কমিটিতে ত্যাগী-পরীক্ষিতদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় লন্ডনে থাকা তারেক রহমানের কাছ থেকে সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নেয়া বিষয়ে কথা বলেন খালেদা জিয়া। বৈঠকে উপস্থিত থাকা বিএনপির কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব বিষয় জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে বেগম জিয়া এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেগম জিয়ার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান।
দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জানান যে, সকল কমিটি গঠন করা হয়েছে হচ্ছে লন্ডন থেকে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বলেন যে, কমিটি গঠনের ব্যাপারে তার মতামতও নিতে হবে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে রাজনীতি, গণতন্ত্র এবং বিএনপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে মূলত খালেদা জিয়া সবার বক্তব্য শোনেন। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট এবং পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে নির্বাচনে না যাওয়ার যে অবস্থান, সেই অবস্থান সম্পর্কে বেগম খালেদা জিয়াকে অবহিত করেন।
এছাড়াও বৈঠকে বিএনপির আরেক নেতা মির্জা আব্বাস এবং নজরুল ইসলাম খানও কথা বলেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়া শেষে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বৈঠকে উপস্থিত স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, খালেদা জিয়া যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র রক্ষা করার কথা বলেছেন। গণতন্ত্রের বাইরে গিয়ে অনির্বাচিত কোনো সরকার যেন আবার চেপে না বসে, বিশেষ করে এক-এগারোর মতো কোনো পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়- সে ব্যাপারে বিএনপির নেতাদের সতর্ক করেছেন।
খালেদা জিয়া বলেছেন, আরেকটি এক-এগারোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বিএনপিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি উল্লেখ করেন- ২০০৭ সালের এক-এগারোতে বিএনপিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখার কথা বলেন।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া গত কিছুদিন ধরে বিএনপির কমিটিগুলো সম্পর্কে কোনো মতামত দেননি বা তার কোনো মতামত নেয়াও হয়নি। এছাড়াও খালেদা জিয়া প্রত্যেকটি আসনে কারা কারা সম্ভাব্য প্রার্থী হবেন এবং তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। খালেদা জিয়া সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। এ নির্বাচনে কারা কারা আগ্রহী এবং তারা স্বতন্ত্রভাবে যদি নির্বাচন করলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে- সে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে চান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা বিএনপির আরো একজন নেতা বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত প্রফুল্ল ছিলেন। তিনি হাসিখুশিভাবেই কথা বলেন। তবে দলের সাম্প্রতিক তৎপরতা নিয়ে খালেদা জিয়ার মধ্যে এক ধরনের বিরক্তি এবং ক্ষোভ দেখা গেছে।