পাপলুর শোকজ বার্তায়ও কম্পন
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩৬:৩৫,অপরাহ্ন ৩০ মার্চ ২০২৩
ওয়েছ খছরু:
সিদ্দিকুর রহমান পাপলু। ছাত্র জমানা থেকে নানা কারণে আলোচনায় তিনি। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। সেখানেও নানা বিষয়ে আলোচিত হন। এরপর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক হন। জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। রাজনীতিতে এক্টিভ। বাধ্য- বাধকতার কারণে যুবদলের সভাপতি পদে নির্বাচন করতে পারেননি। অপেক্ষায় ছিলেন জেলা বিএনপি’র প্রথম যুগ্ম সম্পাদক হবেন। কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের ওপর বিশ্বাস ছিল।
জেলার সভাপতি কাইয়ূম চৌধুরীকেও রেখেছিলেন আস্থায়। জেলা যুবদলের সভাপতিও হলেন না, জেলা বিএনপি’র প্রথম যুগ্ম সম্পাদকের পদও হারালেন। তৃতীয় যুগ্ম সম্পাদক হলেন। এতে ক্ষেপে যান পাপলু। অনেকটা আবেগীও তিনি। গত সপ্তাহে সিলেট সফরে আসা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কাছে নালিশ দিয়েছেন। কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জেলার সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরীকে। মুক্তাদির প্রসঙ্গে কাইয়ূম চৌধুরীর মন্তব্য’র অপ্রকাশিত তথ্য ফাঁস করে দিলেন। ভার্চ্যুয়াল যুগ। দলের অভ্যন্তরীণ এসব কথা রেকর্ড করেছিলেন অনেকেই। এরপর সেটি ছড়িয়ে দেয়া হলো ভার্চ্যুয়্যাল জগতে। পাপলুর কথাবার্তার বিষয়টি দৃষ্টিকটু। অনেকেই মেনে নেননি। ফের আলোচনায় আসেন পাপলু। এবার সরাসরি কেন্দ্রের নজর পড়লো তার উপর। করা হয়েছে শোকজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। সিলেট জেলা বিএনপিতে এক সপ্তাহে এমন সব ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ এক বছর পর গত সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি’র কমিটি। এর আগে ভোটে নির্বাচিত জেলার সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদকে দিয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। জেলা বিএনপি পুর্ণাঙ্গ হওয়ার পর অনেকেই অবাক হয়েছেন, আবার তৃণমূলের নেতারা খুশি হয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- জেলা বিএনপি’র কমিটিকে একপেশে কমিটি, মফস্বলের নেতাদের কমিটি, টাকার কমিটি, ব্যক্তিনির্ভর নেতার কমিটি সহ নানাভাবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরব। একে-অপরকে নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। এতে দেখা গেছে- যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পর্যায়ের নেতারাও এসে এই বিতর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন। সিলেট জেলা বিএনপি ভোটের মাধ্যমে যতটা না শক্তিশালী হয়েছিল, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর ততটাই বিতর্কিত হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ না খুঁজে আবেগী নেতা পাপলুকে শোকজ করা হয়েছে। এই শোকজকে অনেকেই ‘থ্রেট’ মনে করলেও কেউ কেউ শৃঙ্খলা ফেরানোর পথ হিসেবে মনে করছেন। তবে- শোকজ পাওয়ার পর পাপলু চুপ। তার পক্ষ কিংবা অনুসারীদের পক্ষ থেকে নীরবতা পালন করা হচ্ছে। অন্যরাও সতর্ক। বিশেষ করে কমিটি নিয়ে দায়িত্বরতরাও সমালোচনা বন্ধ করে দিয়েছেন।
বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন- পাপলুকে শোকজ করা হয়েছে ভিন্ন কারণে। ওইদিন হোটেলে এসে সে যা বলেছে সেটি অতিরঞ্জিতই ছিল। তার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটি ছেড়ে দিয়ে আরও বেশি অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। এতে করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এ কারণে পাপলুকে শোকজ করা হয়েছে বলে বলে জানান তারা। জানিয়েছেন- কোনো ব্যক্তির কারনে সামগ্রিকভাবে দলের ক্ষতি হবে সেটি কেউ মেনে নিতে পারেননি। এদিকে- পাপলুর শোকজ নিয়েও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সিলেটে। শোকজের ঘটনাকে ভালো চোখে নেননি অনেকেই। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা প্রকাশ্যই সমালোচনা করছেন। এই অবস্থায় ফের সক্রিয় হয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম। জেলা বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর থেকে ফের সরব হয়েছে তার ড্রয়িংরুম। বিশেষ করে কমিটি থেকে অবমূল্যায়িত কিংবা বাদ পড়া নেতারা তার কাছে ছায়া খুঁজছেন। শামীমও তাদের নিয়ে নতুন করে রাজনীতি শুরু করেছেন।