হবিগঞ্জে বখাটেদের উত্ত্যক্ততা: বিষপানে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:৩৫ অপরাহ্ণ
হবিগঞ্জের মাধবপুরে বখাটেদের উত্ত্যক্তে এক স্কুলছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে মারা যায় সে।
এর আগে উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামের মাসুমা নামের ওই ছাত্রী বিষপান করে। সে আন্দিউড়া উম্মেতুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ও একই গ্রামের মরতুজ আলীর মেয়ে।
মাসুমার সহপাঠী সাথী বর্ষা, প্রিয়া ও ছাদিয়া জানান, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে মাসুমাকে নিয়ে তারা আন্দিউড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিশোরী ক্লাবে গান শিখতে যায়। এ সময় আন্দিউড়া গ্রামের কিশোর গ্যাং সদস্য নয়ন, ইমন, বিজয় ও আরমান নামে চার বখাটে বিদ্যালয়ের কক্ষে ঢুকে মাসুমাকে উত্ত্যক্ত করে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। চার বখাটের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করে সে। তাই স্কুল থেকে বের হয়ে যায় মাসুমা। ফেরার পথে রাস্তায় এসে আবার মাসুমার হাত ধরে টানা টানি করে ভাবি বলে সম্বোধন জানায় তারা।
মাসুমার মা মাসকুরা জানান, প্রায় এক বছর ধরে আন্দিউড়া গ্রামের মুন পাঠানের ছেলে বখাটে কিশোর নয়নের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে মাসুমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। তাদের অভিভাবকের কাছে বিচার দিয়ে কোনো লাভ হয়নি। শুক্রবার বিদ্যালয়ে ঢুকে মাসুমার ওপর শারীরিক নির্যাতন করে। বিকালে মাসুমা মন খারাপ করে বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকে। বখাটেদের অপমান সইতে না পেরে বিষপান করে।
মাসুমার বাবা মরতুজ আলী জানান, মাসুমাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে শুক্রবার রাতে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমার মেয়ের এ পরিণতির জন্য নয়নসহ দায়ী বখাটেদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
শনিবার সকালে আন্দিউড়া গ্রামে মাসুমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাসুমার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তার সহপাঠীরা ও এলাকার লোকজন ভিড় জমিয়েছেন। অভিযুক্ত নয়নের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে তাদের কেউ নেই। মা-বাবা আত্মীয় স্বজন অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন।
নয়নের মামী রেহেনা বেগম জানান, তারা মাসুমার নির্যাতনের কথা শুনেছেন।
মাধবপুর থানার ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।