অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি: নগরীতে সিসিকের দায়সারা কাজ, ভাগ্যক্রমে বাঁচলেন দম্পতি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:২৯:৪৯,অপরাহ্ন ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সিলেট নগরীতে উন্নয়ন কর্মকান্ডের দোহাই দিয়ে বছরের পুরোটা সময়ই সিটি কর্পোরেশনের কোনো না কোনো বিভাগের কাজে নগরীর ব্যস্ততম রাস্তাগুলোত খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়।এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন নগরবাসী।শুধু দুর্ভোগেই শেষ নয় প্রাণ হারিয়েছেন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক ও কবি।দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন অনেকেই। এবার সিসিকের এমন দায়সারা কাজে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বাঁচলেন এক দম্পতি।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের ঝেঁরঝেরি পাড়া ৪১ নং বাসার সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটি নিয়ে পড়ে একটি ট্রান্সফর্মার। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দম্পতি গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন-নন্দিতা থিয়েটার গ্রুপের অজয় চক্রবর্তী ও তার স্ত্রী নন্দিতা চক্রবর্তী বৃষ্টি।
জানা যায়, বিদ্যুতের দুইটি খুঁটিতে ভর করেছিল ট্রান্সফর্মারটি। খুঁটির পাশেই ড্রেনেজ সংস্কার কাজের জন্য মাটি খুঁড়ে রাখেন সিলেট সিটি করপোরেশনের শ্রমিকরা।এ কারণে খুঁটি দুটি হেলে ট্রান্সফর্মারটি ঝুলে পড়ে যায়।এসময় রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে চালিয়ে স্ব-স্ত্রীক যাচ্ছিলেন অজয় চক্রবর্তী।ট্রান্সফর্মার পড়ে ঝুলে পড়া বিদ্যুৎ লাইন লেগে গিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ওই নারীর পা মচকে যায়। সেই সঙ্গে তার স্বামীও গলায় বিদ্যুতের তার জড়িয়ে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন।পরে তাকে ওসমানী হাসপতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়ার সিটি করপোরেশনকে দায়ী করে বলেন, সিসিকের অপরিকল্পিত খুঁড়াখুঁড়ির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর অন্ধকার পথে মোটরসাইকেলে এক দম্পতি ভাগ্যক্রমে অল্পের জন্য প্রাণে গেছেন। গুরুতর অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২ এর প্রকৌশলী সামছ-ই-আরেফিন বলেন, এখন কোনো বাতাসও নেই যে খুঁটি বা বিদ্যুৎ লাইন পড়ে যাবে। মূলত সকাল থেকে ওই স্থানে সিটি করপোরেশনের শ্রমিকরা ড্রেনের কাজ করতে গিয়ে খুঁড়াখুঁড়ি করে।যে কারণে খুঁটি দুটি নিয়ে ৪ হাজার কেভির ট্রান্সফর্মারটি পড়ে যায়।এতে অন্তত দেড় শতাধিক গ্রাহক অন্ধকারে রয়েছেন।ট্রান্সফর্মারটি ঠিক করতে এবং ঝুলে পড়া বিদ্যুৎ লাইন মেরামতে অন্তত ২৪ ঘন্টা সময় লাগবে।ঘটনাটি সিসিকের ভুলের কারণে ঘটলেও তারা এখন স্বীকার করছে না বলেন তিনি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, ড্রেনেজ সংস্কারের কাজটি তার মাধ্যমে হয়নি।এটি সিসিক থেকে সরাসরি করা হয়েছে।শ্রমিকরা ড্রেন খুঁড়ে রেখে যাওয়ায় এবং নরম মাটি হওয়াতে খুঁটি ঝুলে গিয়ে ট্রান্সফর্মারটি পড়ে যায়।এতে মোটরসাইকেল আরোহি স্বামী স্ত্রী আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকা ড্রেনেজ সংস্কারের কাজ চলছে। ওই এলাকায়ও কাজ চলছে। তবে ট্রান্সফর্মারের পাশে খোঁড়াখুঁড়ি এবং খুঁটি পড়ে যাওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি ওই এলাকায় কাজের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলীর মাধ্যমে খবর নিচ্ছেন।