শিকলে বেঁধে ইটভাটার কাজে বাধ্য
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৩১:১০,অপরাহ্ন ২৭ জানুয়ারি ২০২৩
পাঁচদিন আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু জীবন (ছদ্মনাম)। দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পর সন্ধান না পেয়ে থানায় জিডি করে তার পরিবার। এর মধ্যে নিখোঁজের পরদিনই অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে জীবনের বাবার কাছে দাবি করা হয় দেড় লাখ টাকা। টাকা দিতে না পারলে দেওয়া হয় ছেলের প্রাণনাশের হুমকি।
কিন্তু দেড় লাখের বোঝা টানার সক্ষমতা ছিল না জীবনের বাবার। ফলে উপায় না পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চান তিনি। এরপরই জীবনকে উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেফতারে নজরদারি শুরু করে র্যাব। নজরদারির একপর্যায়ে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য উন্মোচন করে র্যাব।
শুধু জীবনই নয়, জীবনের মতো আরো শিশুসহ বিভিন্ন বয়সীদের অপহরণ করে আটকে রাখতো একটি চক্র। পায়ে শিকল বেঁধে করা হতো মারধর। মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের কাছে চাওয়া হতো মোটা অংকের টাকা। তা আদায়ে ব্যর্থ হলে দিনের বেলায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে করানো হতো ইটভাটার কাজ। আর রাত হলেই পায়ে লাগাতো শিকল।
বুধবার গভীর রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বারৈহাট এলাকায় একটি ঘরে অভিযান চালিয়ে জীবনসহ দুই শিশুকে উদ্ধার ও চক্রটির আট সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন- শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ওরফে কালু চেয়ারম্যান, মো. খোকন, মো. আলাউদ্দিন, মো. ইউসুফ, শহীদুল্লাহ রাজু, মো. নাজিম, মো. জহিরুল ইসলাম ও মো. সেলিম। এর মধ্যে শাহাদাত হোসেন চৌধুরী হাটহাজারী ও বাকিদের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।
র্যাব-৭-এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান বলেন, নগরের হালিশহর থানা এলাকা থেকে এক শিশু হারানোর জিডি তদন্ত করতে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়। পরে অভিযান চালিয়ে চক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় একটি ঘর থেকে পায়ে শিকল ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
মেজর মেহেদী হাসান আরো বলেন, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষদের অপহরণ করে আটকে রাখতো চক্রটি। পরে পায়ে লোহার শিকল বেঁধে মারধর করতো। একপর্যায়ে পরিবারের কাছে ফোন করে টাকা দাবি করতো। টাকা না পেলে মধ্যযুগীয় কায়দায় দিনের বেলায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে ইটভাটায় কাজ করাতো। রাত হলে পায়ে আবার শিকল লাগিয়ে খুঁটির সঙ্গে তালা মেরে রাখতো। গ্রেফতারের পর আইনি ব্যবস্থা নিতে তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ডেইলি বাংলাদেশ