কিবরিয়া হত্যা: ১৮ বছরেও শেষ হয়নি বিচারকাজ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৩৩:২৫,অপরাহ্ন ২৭ জানুয়ারি ২০২৩
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী ও দলের নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার বিচারকাজ দেড় যুগেও শেষ হয়নি।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর পূর্ণ হলেও নানা কারণে থেমে আছে বিচারকাজ।
বছরের পর বছর বিচার না পেয়ে হতাশ স্বজন ও এলাকাবাসী। নানা জটিলতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করায় মামলার কার্যক্রম বিলম্ব হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
নিহত শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এ হত্যায় যারা অংশীদার, তাদের নাম তো সবার জানা আছে; হবিগঞ্জের মানুষ তো খুব ভালো করে জানে। একদিন তাদের বিচার হবে; কিন্তু সেই দিনটা এখনও হয়নি।
হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ৯ বছর পর সম্পূরক চার্জশিট দাখিলের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হলেও তা শেষ হয়নি।
এদিকে সাবেক এ নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ, অঙ্গসংগঠন ও কিবরিয়া স্মৃতি পরিষদ।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের সময় চাকরিতে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে যাওয়া এবং অনেকেই মারা যাওয়াসহ নির্ধারিত তারিখে সাক্ষীদের আদালতে না আসা ছাড়াও নানা কারণে এ হত্যা মামলার বিচারকাজে দেখা দিয়েছে ধীরগতি।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ-পরবর্তী এক জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন তৎকালীন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। এ হামলায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন এবং সিদ্দিক আলীও প্রাণ হারান। আহত হন কমপক্ষে দলের শতাধিক নেতাকর্মী।
ঘটনার রাতেই হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।
এত বছর পরও সব বাধা অতিক্রম করে বিচারকাজ দ্রুত শেষ করে রায় প্রকাশ ও কার্যকর হবে বলে আশা করেন তিনি।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে সাড়ে ৯ বছর পর ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালতে কিবরিয়া হত্যা মামলার তৃতীয় সম্পূরক অভিযোগপত্রে নতুন ১১ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। অন্তর্ভুক্ত আসামি হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি তাজ উদ্দিন, মুফতি সফিকুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, বদরুল, মহিবুর রহমান, কাজল আহমেদ ও হাফেজ ইয়াহিয়া।
এরপর ২০১৫ সালের জুনে মামলাটি সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে; চলছে সাক্ষ্যগ্রহণও।
মোট আসামির মধ্যে অন্য একটি মামলায় ৩ আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। সম্প্রতি হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন। বাকি আসামিদের মধ্যে জামিনে আছেন ১২ জন। পলাতক রয়েছেন ৬ জন এবং হাজতে আছেন ১০ জন।
বর্তমানে মামলা দুটি সিলেট দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন অবস্থায় ১৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।