বিএনপি ঢাকায়, সিলেটে রাজপথে আওয়ামী লীগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:০৪:৪১,অপরাহ্ন ১১ ডিসেম্বর ২০২২
গণসমাবেশে যোগ দিতে সিলেট বিএনপি’র নেতারা অবস্থান করছেন ঢাকায়। নেতাদের প্রায় সবাই শুক্রবার সকালের মধ্যে সিলেট ছেড়েছেন। ঢাকার গোলাপবাগের গণসমাবেশস্থলে সিলেট বিএনপি’র নেতাদের ছিল সরব উপস্থিতি। ফলে গতকাল সিলেটের রাজপথে বিএনপি’র নেতাদের উপস্থিতি ছিল না। তবে রাজপথ দখলে ছিল আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের। দিনভর তারা রাজপথে শোডাউন দিয়েছে। পুলিশও ছিল সতর্ক। নগরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের টহলও জোরদার ছিল। রাজপথ দখলে থাকা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের দাবি; সহিংসতা কিংবা বিশৃঙ্খলার জবাব দিতে তারা রাজপথে অবস্থানে ছিলেন। সিলেট বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন, ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের ঘটনার পর রাজপথে ছিলেন বিএনপি নেতারা।
নগরীতে জেলা, মহানগর বিএনপি’র নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে সরব ছিলেন। নয়াপল্টনের ঘটনার পর তারা দল বেঁধে ঢাকায় চলে গেছেন। এবং গতকাল নয়াপল্টনের গণসমাবেশে সিলেট বিভাগের নেতারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। এ সুযোগে নৈরাজ্য ঠেকাতে আওয়ামী লীগের তরফ থেকে রাজপথে থাকার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
এ কারণে সকাল থেকে স্থানে স্থানে বসে দিন পার করেন নেতারা। নগরে পুলিশের টহলও ছিল জোরদার। বিশেষ করে নগরীর বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। অন্তত ১০টি পয়েন্টে পুলিশ এই কার্যক্রম চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, নাশকতা ঠেকাতে এ তল্লাশি চালানো হয়। সকাল থেকে সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিবের নেতৃত্বে নগরীর প্রবেশমুখ চণ্ডিপুলে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করেছে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগ। দুপুরে চণ্ডিপুলে সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঢাকায় বেআইনি সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি সারা দেশে নাশকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। তারা ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তাই এসব প্রতিরোধে আমরা মাঠে রয়েছি। চণ্ডিপুলস্থ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সসদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আহমদ, সহ-সভাপতি মাসুক উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, রাজ্জাক হোসেন, আজির উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলফাজ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নেছার আলী, তোয়াজিদুল হক তুহিন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আলী আহমদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ধর্ম সম্পাদক ইসমাইল আলী বাচ্চু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাসুক আহমদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
সকাল থেকে মাঠে ছিলেন সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি ও ওসমানীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম আহমদ চেয়ারম্যান। তার নেতৃত্বে নগরের উত্তর অংশের প্রবেশ পথ সুরমা মার্কেট এলাকায় সিলেট জেলা যুবলীগের নেতারা অবস্থান নেন। বিকাল পর্যন্ত তারা ওখানে অবস্থান করেন। এ সময় জেলা যুবলীগ সভাপতি জানিয়েছেন, রাজপথকে কেউ অস্থিতিশীল করতে চাইলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে। সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক মুসফিক জায়গীরদারের নেতৃত্বে আম্বরখানা দর্শন দেউড়ী থেকে মিছিল বের হয়ে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে এসে শেষ হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের যে জায়গায় নিয়ে গেছেন বিএনপি-জামায়াতকে সেটা ধ্বংস করতে দেয়া হবে না।
সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার বলেন, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতেই বিএনপি-জামায়াত পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা করছে। তিনি বলেন, সকল ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সিলেট মহানগর যুবলীগের সকল নেতাকর্মী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সিলেট মহানগর যুবলীগ ও ২৭টি ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল: বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। গতকাল বিকালে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কোর্ট পয়েন্টে এক সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ। এ ছাড়াও বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সভায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।