সিলেট অফিসে টিকিট মিলেনা, অথচ খালি আসন নিয়েই উড়াল দেয় বিমান!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:০৬:৩৮,অপরাহ্ন ১৩ নভেম্বর ২০২২
বাংলাদেশ বিমানের বিরুদ্ধে ‘কৃত্রিম’ টিকিট সংকটের অভিযোগ নতুন নয়। বিভিন্ন সময় যাত্রীরা টিকিটের জন্য গিয়ে আসন সংকটের কারণে খালিহাতে ফিরতে হয়। এরপর দ্বারস্থ হন ট্রেভেলস এজেন্সির। নির্দিষ্ট মূল্যের চেয়ে চড়া দাম দিয়ে জরুরী প্রয়োজনে টিকিট কিনে যাত্রা করতে হয়। কিন্তু বিমানে ওঠার পর দেখা যায় যাত্রী শূন্য। ফলে যাত্রীদের মধ্যে অনেক সময় ক্ষোভ পয়দা হয় বেশিদামে টিকিট কিনে।
শুক্রবার বিমানের এক যাত্রী এমন অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট (বিজি-৬০২) বোয়িং ৭৩৭ সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ১৬২ যাত্রী ধারণ ক্ষমতার বিমানে মাত্র ৯৭ জন যাত্রী ছিলেন।আর ৬৫টি সীট খালি ছিল। অথচ সিলেট বিমান অফিসে গিয়ে টিকিট চাইলে টিকিট নেই জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে চড়া দাম দিয়ে ট্রেভেলস থেকে টিকিট কিনেন ওই যাত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যাত্রী বলেন, ‘তিনি তার অসুস্থ মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে টিকিট ক্রয় করতে গেলে সংকট দেখানো হয়। পরে অধিক মূল্য দিয়ে টিকিট কিনে নেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে কোনো সীট খালি থাকে না। কেননা, তারা প্রথমেই বিমানের ভাড়া কমিয়ে রেখে আসন সংখ্যা কমে যাওয়ার সঙ্গে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।অথচ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঠিক তার উল্টো। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শুরুতে টিকিটের দাম বাড়িয়ে দেয়। এরপর আসন খালি থেকে যাওয়ায় শেষ মুহুর্তে গিয়ে দাম কমিয়ে আনা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মাথাভারি প্রশাসনের কারণে বিমানের এমন অব্যবস্থাপনা। শুরুতে টিকিটের মূল্য বাড়তি ধরা হয়।পরবর্তীতে সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে টিকিটের মূল্য কমিয়ে আনা হয়। তখন আর যাত্রী মিলে না। যে কারণে সীট খালি থেকে যায়। তাছাড়া বিমানের অব্যবস্থাপনার কারণে যাত্রী কমার অন্যতম কারণ। কেননা, বেসরকারি এয়ারলনাইন্সগুলোর কর্মীরা যেভাবে দায়িত্বের সঙ্গে তাৎক্ষনিক যাত্রীদের মালামাল সংরক্ষণ ও সরবরাহ করেন। সেখানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মীরা অনেকটা উদাসীন। তারা এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন না।
যাত্রীদের অভিযোগ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মীরা যাত্রীদের লাগেজ ও ব্যাগেজগুলো যেনোতেনো ভাবে ফেলে রাখেন। যাত্রীর লাগেজের ব্যাপারেও তারা যত্মশীল না। সম্প্রতি এক মহিলা যাত্রীর লাগেজ ছুড়ে ফেলার কারণে ঝগড়াও বাধে। এ নিয়ে অভিযোগ করেও ওই নারী যাত্রী কোনো প্রতিকার পাননি।
এ ব্যাপারে এয়ারলাইন্স ক্লাব অব সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও শিপার এয়ার সার্ভিসের সিইও খন্দকার শিপার আহমদ বলেন, বিমানের কোনো জবাবদিহীতা নেই। অন্য এয়ারলাইন্সগুলোতে অভিযোগ করলে এমডি পর্যন্ত চলে যায়। মূলত; বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে জবাবদিহীতা থাকলে এমনটি হতো না। বিশেষ করে ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের উল্টো নীতি বিমানকে ক্ষতির মুখে ফেলছে। ফলে যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। অথচ অন্য এয়ারলাইন্সগুলো ঠিকই ব্যবসা করছে। এ বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীও ভূমিকা নেওয়ায় পরিস্থিতি ঠিক হয়েছিল। এখন আবারো ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। ফলে অন্য বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে ভাড়া বেশি থাকলেও সীট খালি থাকে না।
এ বিষয়ে জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জেলা ব্যবস্থাপক মো. মনসুর আহমদ ভূঁইয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শ্যামল সিলেট