সিলেটে শিশুর কান্নায় খোঁজ মিললো বাবা মায়ের ঝুলন্ত লাশের
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ নভেম্বর ২০২২, ৬:৫৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সকাল ৯টা। ঘরের ভেতর থেকে ভেসে আসছিল কান্নার আওয়াজ। একটি শিশু কাঁদছে। অন্য কোনো সাড়াশব্দ নেই। ভেতরে বসবাস করেন শিশু এবং তার বাবা-মা। এ নিয়ে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তারা ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া মিলেনি। শেষে আশপাশের লোকজন পুলিশের জরুরি নম্বরে ফোন দেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দরোজা ভেঙে ভেতর থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ওই শিশুটি তার মায়ের ঝুলন্ত লাশের পাশে বসে কাঁদছিলো।
এমন হৃদয় বিদারক ঘটনায় অবাক প্রতিবেশীরা। সিলেট নগরীর পাঠানটুলার পল্লবী আবাসিক এলাকার সি-২৫ নম্বর বাসা থেকে ওই স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা- পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী ও স্ত্রী। পাওয়া গেছে একটি চিরকুটও। গতকাল বেলা ১১টা দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। নিহতরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাগ ইউনিয়নের রাজাবাজ গ্রামের নির্ণয় দাসের মেয়ে শিপা দাস ও একই গ্রামের রুকুনি তালুকদারের ছেলে রিপন তালুকদার। তারা পল্লবী আবাসিক এলাকার ধীরেন্দ্র দের ওই বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন। এই দম্পতির দুই বছর বয়সী একটি শিশু সন্তান রয়েছে। রিপন একটি বিস্কুট কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, সকাল ৯টার দিকে ওই ঘরের মধ্যে শিশুর কান্না শুনতে পান প্রতিবেশীরা। বাইরে থেকে তখন ডাকাডাকি করে রিপন ও শিপার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিষয়টি জানানো হয় জালালাবাদ থানা পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে পৃথক কক্ষ থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে লিখা আছে, ‘আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছি, তোমরা আমার সন্তানকে খেয়াল রেখো।’ তবে চিরকুটটি শিপা নাকি রিপন লিখেছেন, তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশে উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গৌতম দেব ও জালালাবাদ থানার ওসি নাজমুল হুদা খান। জালালাবাদ থানার ওসি নাজমুল হুদা খান জানিয়েছেন, সকাল ১১টার দিকে আমরা খবর পাই। তারপর ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্ত হবে। তিনি বলেন, ‘ঠিক কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহের তথ্য জানা গেছে।’