শামীম-ফারুকে ঐক্যবদ্ধ সিলেট আওয়ামী লীগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:১১:১৬,অপরাহ্ন ১৪ অক্টোবর ২০২২
ওসমানীনগরে নৌকা প্রতীকে এবার প্রার্থিতায় এসেছে ‘চমক’। জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপিই হলেন নৌকার প্রার্থী। বাড়ি ওসমানীনগরের সাদিপুরে। সিলেটে রাজনীতি করা শামীম আহমদ এবার ওসমানীনগর আওয়ামী লীগের কাছে নতুন প্রার্থী। গ্রুপিং থাকলেও আপাতত শামীম আহমদ ভিপিতেই ঐক্যবদ্ধ ওসমানীনগর আওয়ামী লীগ। বিশ্বনাথ পৌর শহরেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গ্রুপিংয়ের অন্ত নেই। নানা বিভক্তি আছে দলের ভেতরে মেয়র পদে প্রার্থী হতে নৌকার টিকিট চেয়েছিলেন ১০ জন। এখন বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে কেবল একজন। তবে- নৌকার প্রার্থী ফারুকের পক্ষে একাট্টা বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের নেতারা। এবার ওসমানীনগরে দ্বিতীয়বারের মতো উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রথম নির্বাচনে বিদ্রোহী থাকায় জয় ঘরে তুলতে পারেনি আওয়ামী লীগ। বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা বিএনপি নেতা ময়নুল হক চৌধুরী নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
এর মধ্যে ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ, ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান নাজলু, যুগ্ম সম্পাদক জাবেদ আহমদ আম্বিয়া, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান সোহেল। নৌকা পেতে দলীয় প্লাটফর্মে তীব্র লড়াই করেন ওই ৬ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ বেচে নিল শামীম আহমদ ভিপিকেই। এদিকে- শামীম আহমদ নৌকার প্রার্থী হওয়ার পর অন্যরা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেননি। কেউ মনোনয়নপত্রও জমা দেননি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিতে প্রার্থী থাকা অনেকেই গেছেন রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে। ওসমানীনগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত। একাংশের নিয়ন্ত্রক হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও অন্য অংশের নিয়ন্ত্রক যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তবে- এবার ওসমানীনগরে শামীমের পক্ষে দুই অংশের নেতারাই সক্রিয়।
আগে ভাগেই নিচ্ছেন নির্বাচনের প্রস্তুতি। বিশেষ করে ওসমানীনগর আওয়ামী লীগের তরুণ নেতারা মাঠে সক্রিয়। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পেয়েছেন দুই জনকে। একজন হচ্ছেন গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি কামরুল ইসলাম খেলাফত মজলিস নেতা সৈয়দুর রহমান। তারা দুই জনের পক্ষে এখনো দলীয় নেতারা মাঠে নামেননি। বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ প্রথম পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। শুরুতে তাকে নিয়ে নির্ভার ছিলো আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিশ্বনাথ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান প্রার্থী হয়ে ঘুম হারাম করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর। তবে- ফারুক আহমদের পক্ষে আওয়ামী লীগের সব অংশের নেতারা ঐক্যবদ্ধ। ইতিমধ্যে তাকে নিয়ে তারা মাঠ সাজাতে শুরু করেছেন। ফারুক আহমদ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিব ছাড়াও বিশ্বনাথ বিএনপির সভাপতি জালাল আহমদ ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা আখদ্দুস আলীরও মুখোমুখি হচ্ছেন। তবে- আওয়ামী লীগ প্রথম পৌর নির্বাচনে জয় পেতে প্রার্থী পক্ষে একাট্টা হয়ে মাঠে নামছে।
গতকাল বিশ্বনাথে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সব বলয়ের নেতারা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকা অঙ্গীকার করেছেন। সিলেট-২ নির্বাচনী আসনের দুটি এলাকা ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী হচ্ছেন এ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি। তিনি দুই এলাকার আওয়ামী লীগের অভিভাবকও। এবার সঙ্গে রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান। তাদের টিমওয়ার্কও ভালো। ফলে ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথে জয় পেতে এবার সর্বশক্তি নিয়োগ করবে বলে আওয়ামী লীগ- এমনটি জানিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। আর নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে দেশে এসেছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতারা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও। তিনি এরই মধ্যে কয়েকটি দলীয় বৈঠকে উপস্থিত হয়ে নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে সক্রিয় থাকার জন্য নেতাকর্মীদের আহবান জানিয়েছেন। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন- নৌকার পক্ষে আওয়ামী লীগের সবাই ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আছে, কিন্তু কোনো বিভক্তি নেই। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে দুটি নির্বাচনে প্রচারনায় নামবে। এবং আমরা আশাবাদী জয় আমাদেরই হবে।