জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চায় সিলেট বিএনপি
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:১৩:৫৫,অপরাহ্ন ০৪ অক্টোবর ২০২২
সিলেটে দল গোছানো প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বিএনপি’র। জেলা বিএনপি’র সম্মেলন নেতাকর্মীদের মধ্যে সাড়া ফেলেছিল। এরপর জেলা ও মহানগর যুবদলের সম্মেলন ও কাউন্সিল। ভোটের মাধ্যমে করা হয়েছে নেতৃত্ব নির্বাচন। এখন চলছে মহানগর বিএনপি’র সম্মেলনের প্রস্তুতি। ওয়ার্ড সম্মেলন শুরু হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে মহানগর সম্মেলন করতে চান নেতারা। সিলেটে বিএনপি’র সাংগঠনিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। নেতাদের মধ্যে দূরত্ব কমে এসেছে। মাঠে কর্মসূচি পালনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন নেতাকর্মীরা।
এই অবস্থায় জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চান নেতারা। আন্দোলন চাঙ্গা করার মতো কর্মসূচিও চান তারা। এ কারণে দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠককালে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দাবি করেছেন তারা। রোববার বিকালে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে সংযুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করতে জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতাদের মতামত জানতে চাইছেন।
এ কারণে তিনি প্রতিটি বিভাগের বিএনপি’র দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন সহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিলেট বিভাগের বিএনপি’র প্রতিটি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদকরা তাদের সাংগঠনিক রিপোর্ট তুলে ধরেন। এতে সিলেট অঞ্চলে দলের বর্তমান অবস্থান বর্ণনা করা হয়। বৈঠকে সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘এটি কোনো সাংগঠনিক বৈঠক ছিল না। এরপরও দলের হাইকমান্ডের কাছে আমাদের তরফ থেকে সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, আমরা আগের চেয়ে অনেক গোছালো। দল গোছানোর কাজ শেষ করার পর এখন আমরা কর্মসূচি চাই। সিলেট জেলায় আগামী ১৯শে নভেম্বর বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সমাবেশের আয়োজন করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এর আগে আমরা স্থানীয় ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন চালাবো।’ তিনি বলেন, ‘সিলেটের আন্দোলন কর্মসূচিতে গত এক বছরে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেড়েছে। এখন ডাক পড়লেই জেলা ও মহানগরের সব পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত হন। আমরা জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চাই। এ জন্য আমাদের তরফ থেকে জনসংযোগ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এই কার্যক্রমকে আরও জোরালো করতে গতি বাড়ানো হবে। এসব বিষয় আমরা হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছি।’ এদিকে সিলেট মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘আমরা দল গোছানো ও আন্দোলন এক সঙ্গেই চালাচ্ছি। বিএনপি’র ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীরা এখন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। সিলেট মহানগরে আমরা পাড়া ও ওয়ার্ড সম্মেলন করতে গিয়ে যে সাড়া পাচ্ছি; সেটি অভূতপূর্ব। একটি দল ১৪ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও মানুষের আগ্রহ ও উৎসাহ আমাদের প্রেরণা যোগাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির অবস্থান হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। অন্য কোনো ফরম্যাটে নির্বাচন করতে হলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। এ জন্য আমরা জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি ও আন্দোলনের কথা জানিয়েছি। হাইকমান্ড আমাদের মতামত গ্রহণ করেছে। এখন কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হবে সেটি আমরা পালন করবো। সিলেটের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে সব সময় সোচ্চার রয়েছেন বলে জানান তিনি।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি এম নাসের রহমান, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জি কে গউছ, মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগরের সদস্য সচিব মিফতা সিদ্দিকী এবং বিভাগের সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার নেতৃবৃন্দ। সিলেট জেলা ও মহানগর নেতারা জানিয়েছেন, স্থানীয় পর্যায়ের ইস্যু নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। স্থানীয় ইস্যুতে জনগণের পাশে থাকার জন্য জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।